চার-ছক্কার হই হই কই?

ডেস্ক : ‘চার-ছক্কার হই হই, বল গড়াইয়া গেল কই!’ বিপিএল নিয়ে এই গানটি বেশ সাড়া ফেলেছিল সে সময়। টি-২০ ক্রিকেট কিংবা বিপিএলে মানেই যেন চার-ছক্কার হই হই। গানের কথাগুলো সেই ইঙ্গিতই দেয়। চার-ছক্কার হই হই যে আগের আসরগুলোতে দেখা যায়নি তাও কিন্তু না।

বিপিএলের ২০১৩ সালের আসরে সর্বোচ্চ ২১৭ রান তুলেছে ঢাকা। সেবার দেখা গেছে ১৯৮ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। বাংলাদেশের শাহরিয়ার নাফিস, আশরাফুল, শামসুর রহমান, সাব্বির রহমান কিংবা বিদেশি তারকাদের মধ্যে ক্রিস গেইল, আহমেদ শেহজাদ, ডেসকট, এভিন লুইসদের ব্যাট থেকে দেখা গেছে সেঞ্চুরি। কিন্তু এবার যেন নেই তার কিছুই।

অথচ এবারের আসর জমার কথা ছিল আরও বেশি। গেইল প্রায় শুরু থেকেই চলে এসেছেন বিপিএল খেলতে। ওয়ার্নার-স্মিথ-লুইসরা এসেছেন। ডি ভিলিয়ার্স আসবেন। বিপিএলে খেলতে উড়ে এসেছেন অ্যালেক্স হেলসরা। কিন্তু রান নেই কারও ব্যাটে। দেশি তারকাদের মধ্যে তামিম-সৌম্য, লিটন-সাব্বির কিংবা সাকিব-মুশফিকরাও দিতে পারছেন না চার-ছক্কার মজা।

সবার ব্যাটে মরিচা ধরেছে একথা বলার অবশ্য জো নেই। তবে উইকেটে যে গলদ আছে তা ম্যাচ দেখে বোঝা যায়। তা না হলে খুলনার করা ১১৭ রান তুলতে ঘেমে-নেয়ে উঠবে কেনো রাজশাহী। কুমিল্লা তারকাভরা ব্যাটসম্যান নিয়ে কেনই বা অলআউট হয়ে যাবে কম রানে। ওয়ার্নারকে ফিফটি করতে খেলতে হয় রানের সমান বল। ব্যাটসম্যানদের এই রান খরার কারণে মাঠে দর্শকও করছে খা খা।

দ্বিতীয় দফা বিরতির আগে বুধবার পর্যন্ত আটটি ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে। এতে ১৬ ইনিংসের মধ্যে দেড়শ প্লাস রান উঠেছে মাত্র ছয়টিতে। একশ’র নিচে গুটিয়ে যাওয়া ইনিংস আছে তিনটি। রান কম তো বাউন্ডারিও নেই। আট ম্যাচে দর্শকরা ছক্কা দেখতে পেয়েছে ৭১টি। ম্যাচ প্রতি যা নয়ের কাছাকাছি আর ইনিংস প্রতি চারটির মতো। অথচ ২০১৭’র আসরে ছক্কা হয়েছিল ৫৪৬টি। ম্যাচ প্রতি প্রায় ১২টি করে।

টি-২০ ম্যাচ শুধু চার-ছক্কার হবে এমন ভাবা অবশ্য ভুল। আগের আসরগুলোতে কম রানের ম্যাচ হয়নি তাও না। কিন্তু দর্শক চান চার-ছক্কার খেলা। দর্শক টানতে না পারলে ব্যর্থ ধরা হবে টুর্নামেন্টও। ফ্রাঞ্চাইজি চাইবে না দল চালাতে। টিভি শর্ত মিলবে না। বিপিএল বিশ্বের অন্যতম সেরা লিগ না হওয়ার কারণ সম্ভবত এখানকার রান খরা। এবার তার ব্যতিক্রম আশা করেছিল দর্শকরা। এছাড়া এবারের বিপিএলে বিতর্কিত আম্পারিং, হর্টস্পট না থাক, ধারাভাষ্যে গলদ তো আছেই। সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত অবশ্য দিয়েছেন কৃতপক্ষ। এখন দেখার বিষয় আগামী ম্যাচে পরিবর্তন কিছু চোখে পড়ে কিনা।