চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যান চাপায় পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যুর রহস্যের জট খুলছে

চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যান চাপায় পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যুর রহস্যের জট খুলছে

জেপুলিয়ান দত্ত জেপু,চকরিয়াঃ
কক্সবাজারের চকরিয়া ডুলাহাজায় সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ ভাইয়ের মৃত্যুর রহস্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জীবিত একমাত্র বোন মুন্নি সুশীল(২৮) এর ভাষ্যমতে, চট্টগ্রামের দিকে যাওয়ার পথে প্রথমে তাদের চাপা দিয়ে একটু সামনে গিয়ে অবস্থা বেগতিক দেখে পিকআপ ভ্যানটি ঘুরিয়ে আবার কক্সবাজারের দিকে চলে যায়! কিন্তু যাবার সময় পুনরায় রাস্তায় আহত মানুষগুলোর উপর দিয়ে পিকআপ ভ্যানটি চালিয়ে যায়।

প্রথম চাপায় আহত মানুষগুলো তখন রাস্তার মধ্যে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতেছিল কিন্তু দ্বিতীয়বার তাদের উপর দিয়ে যখন পিকআপ ভ্যানটি চলে যায় তখন তারা একেবারে নিস্তেজ হয়ে যায় অর্থাৎ মৃত্যু নিশ্চিত হয়! দ্বিতীয়বার চাপা না দিলে হয়তো কয়েকটা প্রাণ বেঁচে যেত। এবারের ঘটনাটি বর্বরোচিত এবং অমানবিক এটা বলার আর কোন অপেক্ষা রাখে না!

উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার কবল থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরেছেন ১০ দিন আগে মৃত্যুবরণ করা সুরেশ চন্দ্র সুশীলের মেয়ে মুন্নী সুশীল (২৮)। তাঁর বর্ণনা মতে, পরলোকগত পিতার শ্মশানে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাঁরা সব ভাইবোন একসঙ্গে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তাঁরা চট্রগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের মালুমঘাট খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তা পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। এরমধ্যে  দ্রুতগতিতে একটি পিকআপ ভ্যান তাঁদের চাপা দেয়। দুর্ঘটনার সময় মুন্নী এক ভাইয়ের ধাক্কায় মাটিতে ছিটকে পড়েন। এতে তিনি বেঁচে যান।

মুন্নীর দাবি, সবাইকে মেরে ফেলার জন্য ওই চালক দ্বিতীয়বার তাঁর ভাইবোনদের চাপা দিয়েছে। হইচইয়ের মধ্যে তিনি গাড়িটির নম্বর দেখতে পারেননি। তখন খুব ভোর থাকায় সড়কে মানুষজন ছিল না। এই ঘটনায় জড়িত পিকআপ চালক কে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা উচিত।
এদিকে,১০ দিন আগেই স্বামী (সুরেশ শীল) মারা গেছেন। স্বামী হারানো মিনু রানী শীল সন্তানদের দিকে চেয়ে সেই শোক সামলানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এখন মা মিনু রানী শোক সামলাবেন কীভাবে?

বুকফাটা আর্তনাদ করছে মা। পাঁচ পাঁচটি লাশের ভার যে তিনি সইতে পারছেন না! এ যে তাঁর কলিজার পাঁচ টুকরো, তাঁর সন্তান।
মিনুর স্বামী মারা যাওয়ায় মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল ক্ষৌরকর্ম। পরদিন (৯ ফেব্রুয়ারি) ক্রিয়ানুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ক্ষৌরকর্ম শেষ করে বাবার শ্মশান থেকে ফেরার পথে ঘাতক পিকআপ (ডাম্পার) কেড়ে নেয় মিনুর ৫ সন্তানকে। তাদের সঙ্গে ছিল আরও ২ ছেলে ও ১ মেয়ে। তাঁরাও বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পাঁচ সন্তানকে একসঙ্গে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় মিনু রানী শীল (৫০)। সন্তান হারানো মায়ের আর্তনাদ থামছেই না। প্রতিবেশী ও স্বজনরা সান্ত্বনা দিলেও থামছে না মায়ের আহাজারি।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকার মৃত সুরেশ শীলের বাড়িতে দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, উঠানে সারিবদ্ধভাবে রাখা অনুপম শীল, নিরুপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ শীলের মরদেহ। এ সময় লাশের পাশে বসে মা মিনু রানী শীল আর্তনাদ করে বলছেন, যাদের মানুষ করেছি, তাদের নিয়ে গেছে। কাদের জন্য বাঁচব। এমন আর্তনাদ করে বারবার মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিলেন তিনি।

প্রতিবেশী ও স্বজনরা মিনু রানীকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বারবার। কিন্তু কোনো কিছুতেই থামছে না মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ।
১০ দিন আগেই স্বামী (সুরেশ শীল) মারা গেছেন। স্বামী হারানো মিনু রানী শীল সন্তানদের দিকে চেয়ে সেই শোক সামলানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এখন মা মিনু রানী শোক সামলাবেন কীভাবে?
বুকফাটা আর্তনাদ করছে মা। পাঁচ পাঁচটি লাশের ভার যে তিনি সইতে পারছেন না! এ যে তাঁর কলিজার পাঁচ টুকরো, তাঁর সন্তান।

মিনুর স্বামী মারা যাওয়ায় মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল ক্ষোরকর্ম। পরদিন (৯ ফেব্রুয়ারি) ক্রিয়ানুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ক্ষোরকর্ম শেষে করে বাবার শ্মশান থেকে ফেরার পথে ঘাতক পিকআপ (ডাম্পার) কেড়ে নেয় মিনুর ৫ সন্তানকে। তাদের সঙ্গে ছিল আরও ২ ছেলে ও ১ মেয়ে। তাঁরাও বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পাঁচ সন্তানকে একসঙ্গে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় মিনু রানী শীল (৫০)। সন্তান হারানো মায়ের আর্তনাদ থামছেই না। প্রতিবেশী ও স্বজনরা সান্ত্বনা দিলেও থামছে না মায়ের আহাজারি।