ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় গোপালগঞ্জে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি

কাজী ওহিদ- গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ-

ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সারাদেশে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে নিম্নচাপের কারণে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হওয়াতে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিটি কৃষকের চোখে এখন পানি আর পানি।

কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টিতে উপজেলার রবিশস্য বোরো বীজ, সরিষা, খেসারী, মুসুরী এবং গম বীজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলার অধিকাংশ চাষি এখন বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন।

চাষিরা বলছেন, বিশেষ করে গত এক সপ্তাহে যারা বোরোবীজ তলা রোপণ করেছিলেন,তারা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, এবার উপজেলার মোট ৩৯০ হেক্টর জমিতে বোরোবীজ তলা রোপণ করে তার মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ ১২৬ হেক্টর, সরিষা ১১০০ হেক্টর মধ্যে ২২০, খেসারি ১২৫০ হেক্টর মধ্যে ২৭৫, মুসুরী ১০৫০ হেক্টরের মধ্যে ৩১৫, গম ৪১৬০ হেক্টরের মধ্যে ৩১২ ও শাক-সবজি ৪৮৫ হেক্টরের মধ্যে ১১০ হেক্টর জমিতে রোপণকৃত ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় গোপালগঞ্জে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি

সরিষা চাষি নারায়ণপুর গ্রামের জাকির মিয়া সাংবাদিকদের জানান, উপজেলার বেশীর ভাগ জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। আমি ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি তা এখন পানির নিচে। জমিতে পানি সেচের মেশিন লাগিয়ে জমির পানি নিষ্কাশন করার চেস্টা করছি।

পৌরসভার গোপীনাথপুর গ্রামের আনিছ মিয়া বলেছেন,এবার আমি সাড়ে ৫ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা রোপণ করেছি। বৃষ্টির পানিতে আমার সব জমিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নারায়নপুর গ্রামের সরিষা চাষী জাকির মিয়া জানান, উপজেলার বেশীর ভাগ জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমি ২ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি তা এখন পানির নিচে।

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস আহম্মেদ জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এটা পেয়েছি। তবে জমি থেকে পানি নিস্কাশন ও মাঠ পর্যায়ের পূর্নাঙ্গ তথ্য পেতে সময় লাগবে।মুকসুদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবৃদ মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, নিম্নচাপ এবং অসময়ে বৃষ্টির কারণে মুকসুদপুর উপজেলায় ফসলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে,আর যেসব জমিতে সপ্তাহ খানের মধ্যে বীজ রোপন করেছিল ওই সকল কৃষকদের ক্ষতির পরিমান অনেক বেশী হয়েছে।

তিনি বরো জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে এ বিষয়ে যদি পরবর্তীতে সরকার কর্তৃক কোন প্রণোদনা কার্যক্রম ঘোষণা করা হয় তাহলে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি তা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে এবং কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দেয়ার জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের সকল শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ কৃষকদের মাঠে পরামর্শ দেয়ার কাজে ব্যস্ত আছেন।