ঘাটাইল মহাসড়কে দিন দিন বেড়েই চলছে সড়ক দুর্ঘটনা

সৈয়দ মিঠুন ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের উঠতি বয়সের ছেলেরা চালাচ্ছে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল। এতে দিন দিন অনিরাপদ হয়ে উঠছে সড়ক-মহাসড়ক। বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। শুধু প্রবাসীদের সন্তান নয়, উপজেলার নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত ঘরের সন্তানদেরও মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া চলাচল করতে দেখা যায়। অধিকাংশ বাইকের নেই নিবন্ধন। চালকরা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকারও প্রশ্ন ওঠে না।
গত সোমবার টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া এলাকায় একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নিহত হয় তিন স্কুলছাত্র। গত বছর উপজেলার কাইতকাই গ্রামে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় আত্মহত্যা করে মিশু নামের এক স্কুলছাত্র। এদিকে গতকাল জেলার ভূঞাপুরে মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার পরের দিনই সেটি চালাতে গিয়ে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে তিন কিশোর নিহত হয়।
ঘাটাইলে বিভিন্ন কোম্পানির মোটরসাইকেল শোরুমের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে দেড়শ সিসির মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে ৭৪০টি। এ ধরনের বেশিরভাগ মোটরসাইকেলেই রেডি পিকআপযুক্ত। অল্প সময়ের মধ্যেই দ্রুতগতি ওঠে। তাই উঠতি বয়সের ছেলেদের পছন্দের তালিকায় এই দেড়শ সিসির বাইক।
অনেক সময় দেখা যায়, উঠতি বয়সের ছেলেরা বিকট শব্দে হর্ন বাজিয়ে মোটরসাইকেল দ্রুত গতিতে চালাচ্ছে। এদের অধিকাংশেরই মাথায় হেলমেট থাকে না। এমনকি সাথে দুইজন নিয়েও মোটরসাইকেল চালাতে অহরহই দেখা যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শোরুমের এক মালিক বলেন, গত মাসে তিনি ৪০টি বাইক বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে মাত্র চারটি বাইকের রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেল কেনার তালিকায় প্রথম সারিতে আছে প্রবাসী বাবার স্কুল-কলেজপড়ূয়া সন্তান। আত্মহত্যা, লেখাপড়া বন্ধ এবং বাবা-মাকে হত্যার হুমকি দিয়ে তারা আদায় করে নেয় পছন্দের বাইক।
ঘাটাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত টিএসআই আব্দুল মালেক বলেন, লকডাউন শেষ হওয়ার পর টাঙ্গাইল জেলা ট্রাফিক পুলিশ মোটরসাইকেলের অনিয়ম ধরতে উপজেলায় দু’বার অভিযান চালাই। তখন ২৫টি মামলা দেওয়া হয়। এছাড়া ট্রাফিক আইন অমান্য করায় কয়েক মাসে প্রায় একশ মামলা দেওয়া হয়েছে।
ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, উঠতি বয়সীদের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দেওয়ার ব্যাপারে পরিবার এবং সমাজকে আরও সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে এরই মধ্যে আমরা স্কুল-কলেজের প্রধানদের নিয়ে সভা করেছি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানোর কার্যক্রম চলমান। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।