গোবিন্দগঞ্জ সহ জেলায় শতশত হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে

তাজুল ইসলাম প্রধান ঃ গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি ঃ পরিবেশ,কৃষি ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকা স্বত্তে¡ও করতোয়া নদীর বিধৌত জুড়েসহ বিভিন্ন ফসলি জমিতে এভাবেই প্রতি বছরই চাষ হচ্ছে তামাকের। চাষীরা তামাক চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ায় কমছে কৃষি জমি ও ফসলের উৎপাদন। তামাক শুকানোর জন্য রশিতে ঝুলিয়ে ও মাচাং তৈরি করে কৃষকেরা।চলতি বছরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সহ জেলার প্রায় শত শত হেক্টর জমিতে চাষ করেছে কৃষক।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,শুধু এই উপজেলাতে ১৯ হেক্টর জমিতেই তামাক চাষ হয়েছে।

এ ছাড়াও জেলার পলাশবাড়ী,সাদুল্যাপুর,সুন্দগঞ্জ,সাঘাটা,ফুলছড়ি উপজেলায় প্রায় শত শত হেক্টর জমিতে ক্ষতিকারক তামাক চাষ হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে কৃষকরা বলছে, এবার বেশি জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। এভাবে প্রতি বছরই এই অঞ্চলে তামাকের চাষ করছে কৃষকরা। প্রশাসন কিছু পদক্ষেপ নিলেও তৃণমূল পর্যায়ে তা কার্যকর ভূমিকা না থাকায় তামাকের চাষ অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দরবস্ত,তালুককানুপুর,সাপমারা সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের সহ বিভিন্ন স্থানে সমকালীন ফসলের জমির পাশে চাষ হচ্ছে তামাক। তামাক ক্ষেতগুলোতে আগাছা ও পোকা মাকড় দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে কীটনাশক। জমির পাশে লোকালয় ও কৃষকের বাড়ীতে তামাক পেমচিলাল এড়ানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে চুল্লি। এ সময় তামাক চাষীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, জমিতে আর আগের মতো ধান অন্যান্য ফসলের চাষ হয় না। চাষ হলেও উৎপাদিত শস্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আমরা প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি এবং বিভিন্ন টোবাকো তামাক কোম্পানীর কাছ থেকে অগ্রিম ঋণ পাওয়ায় আমরা তামাকের চাষ করছি। অন্য ফসলের চেয়ে তামাকের চাষ করে কি বেশি লাভ হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে বিশুবাড়ী গ্রামের বেশ কয়েক জন চাষি বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে তামাকের দাম বেশি এবং খরচও কম হয়। শুনেই চাষ প্রথম এক একর জমিতে তামাক চাষ করছি।

পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় জেনেও কেন আপনারা তামাক চাষ করছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না খেয়ে মরার চেয়ে খেয়ে মরা ভালো। সময়কালীন ফসল চাষ করে খরচের টাকাই উঠে না। অধিক লাভের আশায় ও সংসারের ঘাটতি পূরণে তামাক চাষ করছি। তামাক চাষীরা বলেন, এক বিঘা জমিতে তামাক চাষ করতে খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। আর উৎপাদিত তামাক বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। তামাক কোম্পানী আপনাদেরকে ঋণ দেয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক জমিতে তামাক চাষেরর জন্য ৪ হাজার টাকা ও দুই বস্তা সার ও কীটনাশক দেয়। তামাক বিক্রি সময় তা কোম্পানী কেটে নেয়।

এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ) ছাহেরা বানু বলেন, আমরা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের কে তামাকের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে কাজ করছি। তার পরেও অনেক কৃষক লাভের আশায় তামাক চাষ করছেন।