গোবিন্দগঞ্জে ঘন কুয়াশা আর টানা শৈত্যপ্রবাহে শংকিত চাষীরা

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: বছর জুড়ে নানা প্রতিকুলতা ও লোকসানের পর এবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের কাছে নতুন করে লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। গত বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া, বন্যায় আমন ধান, আখ ও সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে এ উপজেলার কৃষকেরা। শীতের সবজি ও রবিশস্য চাষের মধ্যদিয়ে সে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ঘন কুয়াশা, প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাস আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে তাঁদের সে স্বপ্নও নষ্ট হতে চলেছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, এই এলাকার চাষীরা আখ ও ধানের পাশাপাশি আলু, বেগুন, মরিচ, শসা, সিম, মূলা, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি সহ নানা প্রকার শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। শীতের আগমনের সাথে সাথে তাঁরা কাংখিত মূল্যে তাঁদের উৎপাদিত শীতকালীন সবজি বেশ ভালদামে বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছিলেন। কিন্ত গত কয়েকদিনের টানা শৈত্যপ্রবাহ তাদের সে স্বপ্ন ফিকে হয়ে যেতে শুরু করেছে। ঘন কুয়াশার কারণে রোপিত আলুর গাছের পাতা কুকড়ে যেতে শুরু করেছে।

উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের সতীতলা গ্রামের আলুচাষী মহেদুল ইসলাম টানা শৈত্যপ্রবাহ আর কুয়াশার কারণে আলুক্ষেত নিয়ে তিনি দু:শ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান। এভাবে ঘন কুয়াশা অব্যবহত থাকলে ক্ষেতে রোপনকৃত আলু গাছে পাতা কুকড়ে গিয়ে ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এই এলাকার কপি ও মূলা চাষী আবেদুল ইসলাম জানান, তীব্রশীত আর ঘন কুয়াশার কারণে রোপন করা কপি ও মূলার কাংখিতভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে না। কৃষক নূরুল ইসলাম জানান, টানা শৈত্যপ্রবাহ আর কুয়াশার কারণে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা বিবর্ণ হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার খালেদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, শীতে রবি ফসলের তেমন ক্ষতি না হলেও ঘন কুয়াশার কারণে আলু ও ধানের বীজতলার ক্ষতি হতে পারে। অধিক কুয়াশার ফলে আলুক্ষেতে ছাত্রাকের আক্রমণে লেটব্লাস্ট বা ধসা রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে চাষীদের মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাক নাশক ঔষধ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও বোরো ধানের বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এবং সম্ভব হলে সন্ধ্যায় ধানের বীজতলায় পানি সেচ দিয়ে পরদিন সকালে ড্রেনের মাধ্যমে পানি নিস্কাশন করে দেয়ারও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তিনি আরও জানান।