গাংনীতে সরকারি আইন অমান্য করে স্কুলের পাশেই গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা

আল আমীন, মেহেরপুর: সরকারি বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় প্রভাবশালীরা ফসলি জমি থেকে শুরু করে বাসস্থানের পাশেও গড়ে তুলছেন অবৈধ ইটভাটা। বাদ যায়নি স্কুলও। বর্তমান অবস্থা দেখে অনেকেই বলছেন ইটভাটার মালিকরা রাজাধিরাজ। গাংনী উপজেলার ০৮নং ধানখোলা ইউনিয়নের বাহাগুন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই গড়ে উঠেছে নুর ইসলাম ব্রিকস। সব সময় ইটভাটাটি থেকে নিঃসৃত কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে থাকে স্কুলটি। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে স্কুলের শত শত শিশু শিক্ষার্থী।

পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ভাটা স্থাপনের নিয়ম নেয়। তবে নিয়মনীতি অমান্য করেই দেদারসে চলছে ইটভাটার কার্যক্রম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু স্থানীয়রা জানান, ইটভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় সরছে না ভাটা। কাছাকাছি আর কোন স্কুল না থাকায় অভিভাবকেরা অনেকটা বাধ্য হয়েই সন্তানদের দূষিত পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করতে পাঠাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটির পাশেই সারি সারি রাখা হয়েছে কাঁচা ইট। ইট ভাটাতেই বসানো হয়েছে কাঠ কাটা কল। জ্বলছে আগুন, পোড়ানো হচ্ছে কয়লার বদলে কাঠ দিয়ে ইট। মাটি, জ্বালানি, ইট বোঝাই ট্রাক একের পর এক স্কুলের খেলার মাঠ ও প্রবেশ পথ দিয়েই আসা যাওয়া করছে। উচ্চ শব্দ, ধুলা আর ধোঁয়ায় একাকার চারিদিক। এর মধ্যেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান আর খেলাধুলা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ধোঁয়া, ছাঁই আর ধুলোবালিতে তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ক্লাস চলাকালীন সময়ে ইটভাটার ট্রাক্টর ও ট্রাকের আসা-যাওয়ার বিকট শব্দে শিক্ষকদের কথা শুনতে সমস্যা হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুজ্জামান নিজের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু ইটভাটা বন্ধ হয়নি। স্কুলের পাশে ইটভাটা স্থাপনের কারণ জানতে নুর ইসলাম ব্রিকসের মালিক মো. নুর ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি মোবাইল ফোন গ্রহণ (রিসিভ) করেননি।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভূপেশ রঞ্জন রায় বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে অভিযোগের বিষয়টি জানানোর জন্য ও বিষয়টি খতিয়ে দেখে, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করবো।