গঙ্গাচড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় আনন্দে মাতোয়ারা শিক্ষার্থীরা

আব্দুল আলীম প্রামানিক, গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ বিশ্বজুড়ে করোনার থাবায় সবকিছু এলোমেলো। করোনার কারণে প্রতিটি দেশের প্রাণহীন, অর্থনীতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সবকিছুতেই স্থবিরতা। আর করোনার বিস্তার রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করেন দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা। উন্নত কয়েকটি রাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন (টিকা) দেওয়ার কারণে ও নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারের ফলে তাদের দেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয়ের পাঠদান চালু করেছে।

বাংলাদেশ এই অদৃশ্য রোগের উপস্থিতি শুরু থেকে থাকলেও গত ১ থেকে ২ মাস পর্যন্ত ছিলো ভয়ঙ্কর অবস্থা। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের গুণে বিশ্বের বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন আমদানি কারক দেশের কাছ থেকে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন-১৯ (টিকা) আমদানি করেন এবং তা বিনামূল্যে দেশের প্রায় তিন কোটি জনসাধারণকে টিকার আওতায় নিয়ে আসেন এবং বিনামূল্যে টিকার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সরকার। দেশে করোনার বৃহৎ টিকার কার্যক্রমের কারণে দিন দিন কমতে শুরু করেছে এই মহামারি। দেশে করোনার প্রভাব কমার কারণে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সবধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর রোববার থেকে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রথম ধাপে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। দেশের সকল বিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণি কক্ষ কার্যক্রম প্রস্তুতি ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বরন করতে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শ্রেণি কক্ষ।

সারাদেশের ন্যায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার সকল বিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ায় যেন প্রাণ চা ল্যলতা ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘদিন পর সহপাঠীদের কাছে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা ছিলো তৃপ্তির হাঁসি। গঙ্গাচড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, সকাল নয়টা থেকেই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়মূখী হতে। স্কুল ড্রেস, কাঁধে ব্যাগ, আবার কেউবা হাতে বই নিয়ে বিদ্যালয়ে ডুকছেন। ঘরবন্দী জীবন থেকে স্কুলে গিয়ে খুশিতে তারা। গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রবেশ মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র ও হাত মুখ ধোওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়ে ক্লাসে যাচ্ছেন।

এ সময় বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে আলাপকালে জানায়, দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ে আসতে পেরে তারা খুশি। এতোদিন ঘরবন্দী থাকার পর স্কুল খোলার খবরে অধিক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় প্রহর গুণছিল তারা দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর নিজেদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানে এসে খুব আনন্দিত। সহপাটীদের এক সাথে দেখে সবাই খুব আপ্লুত। একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলে ফেরা। সকাল থেকে শিক্ষা সামগ্রী এবং স্কুল ড্রেস পরিধান করে এসেছি। প্রিয় সহপাঠী ও শিক্ষকদের দেখে খুব ভালো লাগছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে দেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা।

এ ব্যাপারে গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আখের মিঞা জানান, বিদ্যালয় খোলার খবর পাওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ রাখছিল। বিদ্যালয়ে আসার পর তাদের মধ্যে খুশির আমেজ লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রত্যেকেই সহপাঠী বন্ধুদের পেয়ে মহাখুশি। তাছাড়াও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশের পূর্বে হাত-মুখ খোয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঠাকুড়াদহ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোকছেদুল হক বলেন, সরকারি ঘোষণার আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিস্কার করে শিক্ষার্থীদের হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থাসহ তাপমাত্রা যন্ত্র পরীক্ষা করে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল আলম জানান, প্রাথমিক স্তরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ শিক্ষার্থীদের হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা এবং স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা আছে কি না তদারকি করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ারও খবর নেয়া হচ্ছে।