গঙ্গাচড়ায় ডাকাত মালেক গণপিটুনীতে নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্ক কাটেনি এলাকাবাসীর

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ডাকাতি, চুরি ও হত্যাসহ একাধীক মামলার আসামী কুখ্যাত আব্দুল মালেক গণপিটুনীতে নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্ক কাটেনি উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের নগর পাইকান গ্রামবাসীর মাঝে। এ ঘটনায় ওই গ্রামের লোকজন দিনে ভয় নিয়ে বাড়িতে থাকলেও রাতে গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শুন্য হয়ে পরে গ্রাম।

এলাকাবাসী জানা যায়, উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের ঢিং পাড়া গ্রামের মৃত অবের আলীর ছেলে একাধিক চুরি, ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামী আব্দুল মালেক পাশ^বর্তি নগর পাইকান গ্রামে গত বছর ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে চুরি করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে গণপিটুনীতে নিহত হয়। পরে উত্তেজিত জনতা তার লাশ পাশেই ঘাঘট নদীর ধারে ফেলে রাখে। ২৫ ডিসেম্বর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মালেকের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। মালেক নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ গ্রামবাসীকে জিজ্ঞাসা করার জন্য থানায় ডেকে আনে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নগর পাইকান গ্রামের রবিউল ও রেজাউলকে আটক করে হত্যায় জড়িত সন্দেহে জেল হাজতে প্রেরণ করে। অদ্যবধি তারা একন পর্যন্ত জেল হাজতে রয়েছে। ওই এলাকার লোকজন বলেন, ডাকাত মালেক চুরি করার সময় ধরা পরে গণপিটুনীতে নিহত হয়। গণপিটুনীর সময় আমাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক লোক ছিল। কিন্তু পুলিশ আমাদের গ্রামের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করার জন্য থানায় ডেকে দুজনকে আটক করে জেলে পাঠালে ওইদিন থেকে আমরাও গ্রেফতার আতঙ্কে আছি। শুধু পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্ক নয়, পুলিশের সাথে সখ্যতাকারী কতিপয় সাংবাদিক আমাদের কাছ থেকে সুবিধা দাবি করে, দাবি না মিটালে আমাদের নাম জড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে মর্মে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভীতি দেখায়। পত্রিকায় নাম আসলে আসামী হতে হবে এমন মন্তব্য করে কতিপয় সাংবাদিক পরিচয়ধারী ভয় দেখানোর কারণে এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো বলেন, মালেক কেমন প্রকৃতির ব্যাক্তি ছিলো উপজেলাবাসীর তা জানা আছে। মালেক তার দলসহ এর আগেও উত্তরপানাপুকুর এলাকায় গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে ছিলো। সে সময় গণপিটুনীতে মালেকের এক সহযোগী নিহত হলেও মালেকসহ তার অপর সহযোগীদের আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে ছিলো। এছাড়া থানাতেও তার রের্কড আছে। তারপরও যদি চুরি করার সময় ধরা পড়ে গণপিটুনিতে একজন কুখ্যাত ডাকাত নিহত যাওয়ার কারণে আসামী হতে হয় তাহলে দু-চারজন নয় গ্রামবাসীর ৫’শ লোকই আসামী হবে। কিন্তু গ্রামে মাঝে মধ্যে অপরিচিত কিছু লোকের ঘুরাফেরার কারণে পুলিশি হয়রানী ভয় ও সাংবাদিক পরিচয়ধারীদের বিভিন্ন দাবি-দাবার কারণে আমাদের আতঙ্ক কাটছেনা। এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠ তদন্তের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এব্যাপারে গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, মালেক হত্যার ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দুষিদের আইনের আওতায় আনা হবে। নিরাপরাধ কাউকে আটক বা হয়রানী করা হবে না। এছাড়া অন্য কোন সংস্থা এ ঘটনায় কাজ করছে কিনা সেটা আমার জানা নেই।