খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে গুরুদাসপুরের পল্লীবিদ্যুত

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২-এর গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম এ দুটি উপজেলার দুটি পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়নের ১৬২টি গ্রামে প্রায় ৮শ’ কিলোমিটার লাইন গুরুদাসপুর জোনাল অফিসের আওতায়।

এতে আবাসিক প্রায় ৭০ হাজার, শিল্প-৮১২, বাণিজ্য ৪ হাজার ৮০, সিআই-৯২৫ ও গভীর নলকূপসহ সেচে ১ হাজার ৬৬৪ গ্রাহক রয়েছে।

এছাড়া জিপি, সড়কবাতির গ্রাহকসহ জোনাল অফিস ছাড়াও নাজিরপুর, খুবজীপুর ও লক্ষ্মীকোল অভিযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে সুবিধাভোগী গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৮০ হাজার। এসব গ্রাহকের সেবা দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিলে ভুল, বিল দেয়ার পরও পরবর্তী বিলে ওই বিল যোগ করে দেয়া, মিটার না দেখেই ইচ্ছেমতো বিল করা, অনেক সময় বিল না পৌঁছানো, ভৌতিক বিল, এমনকি বিল দিতে আসা মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ-বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। আবার একটু ঝড়-বৃষ্টি হলে কোনো কোনো ফিডারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এমনকি একদিন দু’দিন পর্যন্ত লাইন বন্ধ থাকে।

এতে ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংসসহ খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হওয়ার অভিযোগ করেন বিভিন্ন এলাকা থেকে সেবা নিতে আসা মানুষ। অফিস সূত্রে জানা যায়, গুরুদাসপুর জোনাল অফিসে প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহক সেবার জন্য রয়েছে ৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, এজিএম কম, সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, ইনফোর্সমেন্ট কোর্ডিনেটর, মিটার টেস্টার, প্লান্ট সহকারী, বিলিং সুপারভাইজার, কম্পিউটার অপরেটর, ওয়ারিং পরিদর্শক, এমএলএসএস ও ঝাড়–দা রয়েছে একজন করে। অভিযোগ কেন্দ্রে লাইনম্যান রয়েছে ২৬ জন।

মিটার রিডার ৩০, বিলিং সহকারী ৮, ক্যাশিয়ার রয়েছে ২ জন। আর ১০ বছর পূর্বে ২৫ থেকে ৩০ হাজার গ্রাহকের জন্য ওই একই সংস্যক জনবল দিয়ে কাজ চলত। বর্তমানে প্রায় তিনগুণ গ্রাহকের জন্য রয়েছে একই জনবল। কথা হয় বড়াইগ্রামের রামেশ্বরপুর এলাকা থেকে বিল দিতে আসা কলেজ শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, দু’দিন চেষ্টা করে বড়াইগ্রামের ব্যাংকে অতিরিক্ত ভিরের কারণে বিল দিতে না পেরে অবশেষে জরিমানাসহ বিল দিতে এসেছেন গুরুদাসপুর জোনাল অফিসে। এসে দেখেন সেখানেও বিশাল তিনটি লাইন। দাবদাহ উপেক্ষা করে প্রায় ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বিল দিতে হল। একজন ক্যাশিয়ার বিল নেয়ার কারণে এতবেশি সময় লেগেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ধারাবারিষা থেকে বিল সংশোধন করতে আসা মজিবুর রহমান জানান, দেয়া বিল পরবর্তী মাসের বিলের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে। সংশোধন করে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে বিল পরিশোধ করেন তিনি। এদিকে খুবজীপুর কলেজের প্রভাষক বেলালুর রহমান জানান, কয়েক মাস ধরে পূর্ববর্তী মাসের বিল পরিশোধ করার পরও বর্তমান মাসের বিলের সঙ্গে যোগ করে বিল দিচ্ছেন। তিনি জানান, ব্যাংকে বিল পরিশোধ করার পরও এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে।এতে তিনি একবার ব্যাংক আবার বিদ্যুৎ অফিসে ঘোরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. মহিতুল ইসলাম বলেন, কিছুটা জনবল সংকট রয়েছে। পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ হলেই এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। ৩৩ কেভি লাইন মাঠের মাঝ দিয়ে হওয়াতেও কোনো কোনো সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় থাকে। প্রিপেইড মিটার হয়ে গেলে বিলের বিষয়ে আরো কোনো সমস্যা থাকবে না।