খালেদা জিয়ার মুক্তি: ‘বিশেষ’ আবেদনের কথা ভাবছে পরিবার

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে বিশেষ আবেদনের কথা ভাবছে তার পরিবার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শুক্রবার বিকালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তার বোন সেলিমা ইসলাম সাংবাদিকদের একথা জানান।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো আবেদন করবেন কিনা জানতে চাইলে সেলিমা ইসলাম বলেন, আমরা ভাবছি, আমরা আবেদন করব। কবে নাগাদ আবেদন করব তা এখনও ঠিক করিনি। কারণ এভাবে বেশিদিন চললে খালেদা জিয়াকে জীবিত অবস্থায় বাসায় নিয়ে যেতে পারব না। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

খালেদা জিয়া সারাক্ষণ বমি করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবস্থা খুব খারাপ। তার গায়ে জ্বর আছে। ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। বাম হাত সম্পূর্ণ বেঁকে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও নিতে হবে। এ হাসপাতালে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়।

সেলিমা ইসলাম বলেন, এখানকার হাসপাতালের ডাক্তার তাকে দেখছেন। কিন্তু যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। তার যে অবস্থা, এর চেয়ে উন্নত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। তার শরীর খুবই খারাপ। আজও তার ডায়াবেটিস ১৫ ছিল। এভাবে আর কতদিন চলবে? এ হাসপাতালে তো আজ প্রায় ১ বছরের কাছাকাছি হয়ে যাচ্ছে।

বিএসএমএমইউতে যে চিকিৎসা চলছে তাতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না অভিযোগ করে সেলিমা ইসলাম বলেন, দিন দিন তার অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। এজন্য আমরা চাই উন্নত হাসপাতালে তার চিকিৎসা করা হোক। তাকে মুক্তি দেয়া হোক। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে খালেদা জিয়া কথা বলতে পারছেন না বলেও তিনি দাবি করেন।

সিটি নির্বাচনের বিষয়ে খালেদা জিয়া কোনো বার্তা দিয়েছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সে তো কথাই বলতে পারছে না। তবে দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছে।

এর আগে বেলা ৩টার দিকে বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান পরিবারের ৫ সদস্য। সঙ্গে নিয়ে যান বাসায় রান্না করা খাবার ও কিছু ফল।

এদের মধ্যে সেলিমা ইসলামসহ আরও ছিলেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছেলে অভিক ইস্কান্দার, ভাই সাইদ ইস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন ইস্কান্দার।

তবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে আরাফাত রহমান কোকোর শাশুড়ি ফাতেমা রেজা গেলেও সাক্ষাৎকারের তালিকায় নাম না থাকায় তিনি দেখা করতে পারেননি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেয়া হয়েছিল পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সর্বশেষ গত বছর ১ এপ্রিল তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।