খালেদার প্যারোল চূড়ান্ত করতে ঢাকায় আসছেন সিঁথি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি নেতারা নন, বেগম জিয়ার প্যারোল সমঝোতা চূড়ান্ত করবে তার পরিবার। আর এই সমঝোতার খুটি নাটি সমস্যা মেটাতে ঢাকায় আসছেন প্রয়াত কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। বেগম জিয়ার পারিবারিক সূত্রে বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি ঢাকায় আসবেন। বেগম জিয়া গ্রেপ্তার পর এর আগেও তিনি তিনদফা এসেছিলেন। অবশ্য বেগম জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন, প্যারোল সমঝোতা নয়, সিঁথি আসছেন বেগম জিয়ার চিকিৎসা তদারকি করতে। যেহেতু এখন বেগম জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে আনা হয়েছে, সে কারনে তার চিকিৎসা যেন যথাযথ হয় সেজন্য কোকোর স্ত্রী চিকিৎসকদের সংগে সমন্বয় করবেন।

তবে, বিএনপির একাধিক সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বার্তা নিয়েই সিঁথি ঢাকায় আসছেন। জিয়া পরিবার এখন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না। দলের সিনিয়র নেতাদের প্রায় সবাই সরকারের সংগে আঁতাতে জড়িয়ে পরছেন বলেও তারেক জিয়া সহ জিয়া পরিবারের একাধিখ সদস্য মনে করছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ সিনিয়র নেতারাই বেগম জিয়ার মুক্তি বা প্যারোল চান কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বেগম জিয়ার আত্মীয়রা। খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হবার পর থেকে এ পর্যন্ত বিএনপি কোন কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। আদালতে খালেদার মুক্তির ব্যাপারেও বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের উদ্যোগের অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে, জিয়া পরিবারের কেউই বিশ^াস করতে পারছে না যে, বিএনপি নেতৃবৃন্দ সরকারের সাথে খালেদার প্যারোল নিয়ে একটা আপোষ রফায় পৌছতে পারবে। জিয়া পরিবারের একজন সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন বেগম জিয়া আসলেই গুরুতর অসুস্থ। তার দীর্ঘকালীন সুচিকিৎসা দরকার। এজন্য তার মুক্তি অথবা প্যারোল প্রয়োজন। এটা কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়, মানবিক বিষয়। তিনি বলেছেন প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সংগে সাক্ষাৎ করে তার সাময়িক মুক্তির প্রার্থনা করবো। সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি এসে সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে প্যারোলের শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, বেগম জিয়ার প্যারোলের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যে পাঁচ শর্ত দেয়া হয়েছে যেগুলো নিয়ে বেগম জিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে সিঁথি কথা বলবেন। এখানে তারেক জিয়ার দেশে ফেরা বা রাজনীতি থেকে অবসরের যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, তার বিপরীতে সিঁথি পাল্টা প্রস্তাব দিতে পারেন বলেও বিএনপির একটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে। বিকল্প প্রস্তাবে, বেগম জিয়াই রাজনীতি এবং বিএনপির সকল দায়িত্ব থেকে অবসরের ঘোষনা দিতে পারেন বলেও ঐ সূত্র আভাষ দিয়েছে। বিকল্প প্রস্তাবে, বেগম জিয়া অবসরের ঘোষণা দিলে তিনি একজন বয়ো:প্রবীণ নাগরিক হিসেবে প্যারোল চাইতেই পারেন বলে মনে করছে বিএনপির একাধিক মহল। কিন্তু সরকার এই বিকল্প শর্ত আদৌ মানবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, চলতি বছরেই তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার দণ্ড কার্যকর করতে সরকার বদ্ধ পরিকর।