খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আসলেই মানবিক মানুষ

মোঃ সালাউদ্দিন:- খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানার পশ্চিম পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প ও আশপাশের এলাকার শতাধিক গরীব অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার)।

৮ এপ্রিল (সোমবার) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) মেরুং জ্বরজুরি পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে উপস্থিত থেকে অসহায়দের মাঝে এ ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।

‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষ দেরকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় আনছেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’ বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং পর্যায়ক্রমে সেগুলি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।

তারই অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) মেরুং জ্বরজুরি পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে অসহায় গরীব ও দুস্থ পরিবারের জন্য ঈদ উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন। ঈদ উপহার নিতে আসা মানুষের চোখে মুখে আনন্দের ছোঁয়া দেখা যায়। উপহার নিতে ছোট বড় বৃদ্ধা সকল বয়সী লোকের সমাগম ঘটে।

এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সবসময় মানবতার সেবায় নিয়জিত। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করতেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অসহায় গরীব ও দুস্থ পরিবারের জন্য আমাদের এ আয়োজন।

ভবিষ্যতেও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এবং সকল বাহিনীর সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সকল মানবিক কাজে অংশগ্রহণ করবে।

পুলিশ সুপার মুক্তা ধর আরো বলেন, খাগড়াছড়ি জেলায় মাদকমুক্ত সৃজনশীল তারুণ্য তৈরির মাধ্যমে সবুজ ও পরিচ্ছন্ন স্বপ্নের আগামী নির্মাণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। একইসাথে অসুস্থ, দারিদ্র ও বঞ্চিত মানুষদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থেকে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় রয়েছে আমাদের।

আমরা আশাবাদী সবার যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা স্বপ্নের আগামী নির্মাণ করতে সক্ষম হবো। এসময় ঈদ উপহার নিতে আসা মানুষের চোখে মুখে আনন্দের ছোঁয়া দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেন পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হোসেন বলেন, এবারই প্রথম পুলিশ সুপার মহোদয় আমাদের মেরুং এলাকার জুরজুরি গাড়ায় এসেছেন, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা খুবই আনন্দিত ঈদ সামগ্রী ও পুলিশ সুপারকে পেয়ে।

ঈদ উপহার নিতে আসা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা শাহেদা বেগম বলেন, আগে কোনো স্যার এভাবে আমাদের কথা ভাবেনি।

এই স্যার আমাদের শীতের সময় কম্বল দিয়েছেন। আজ আবার ঈদ উপহার দিয়েছেন। সত্যিই আমরা অনেক আনন্দিত। কারণ এভাবে কেউ কখনো আমাদের মূল্যায়ন করেন না। আমরা পুলিশ সুপার মহোদয়ের জন্য দোয়া করি যাতে আল্লাহ উনার মঙ্গল করেন।পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) এর ঈদ উপহার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সাহেরা বেগম। তিনি বলেন, আমাদের সকলেই অসহায় ও দারিদ্র পরিবারের মানুষ। পুলিশ সুপার মহোদয় সব সময় আমাদের পাশে আছেন। এবার ঈদের আগে আমাদের ঈদ আনন্দ দিলেন। তিনি আসলেই মানবিক মানুষ। আমরা তার সাফল্য কামনা করি।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, আমি একজন দিনমজুর। আমার বয়স ৬২ বছর। আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি। এখন তেমন কাজ পাই না। এই বছর ঈদ উপলক্ষ্যে কিছু কিনতে পারি নাই। পুলিশ সুপার আমাদের জন্য ঈদ উপহার সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। পুলিশ সুপার এর থেকে ঈদ উপহার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছি। আমরা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর স্যারের মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, আমি একজন দিনমজুর। দিনমজুর হিসেবে কাজ করে যে টাকা পাই তা দিয়ে দু’বেলা খাবার জোগাড় করা কষ্ট হয়ে যায়। এই ঈদে কিছু কেনা হয়নি। আমাদের পুলিশ সুপার আমাদের জন্য ঈদ উপহার সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। ঈদ উপহার পেয়ে খুব ভালোই লাগছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড আপস) মোঃ জসীম উদ্দিন (পিপিএম), খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তফিকুল আলম, দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নূরুল হক, মেরুং পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নজরুল ইসলাম, স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আবদুর রহমান প্রমুখ।