কুমড়ার বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত লালপুরের গৃহিণীরা

সালাহ উদ্দিন , নাটোর :
কুমড়ো বড়ি তৈরির হিড়িক মাসকলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি হয় কুমড়ো বড়ি। মাছের ঝোল বা সবজির সঙ্গে কুমড়ো বড়ি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার। নাটোরের লালপুরের বিভিন্ন গ্রামে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। হিম শিতল বাতাস ও প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে সুস্বাদু কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত গ্রামের নারীরা।

মাসকলাই ডাল ভিজিয়ে রাখার পর ডালের আটা ও পাকা চাল কুমড়ো মিশিয়ে এ সুস্বাদু বড়ি তৈরি করা হয়।

গ্রামীণ এলাকার ৯০ ভাগ নারী একে অপরকে সহযোগিতা করে কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজটি করে থাকেন। তারা এই বড়ি তৈরি করতে কয়েক মাস আগে থেকেই চাল কুমড়ো পাকানোর ব্যবস্থা করেন। এরপর মাসকলাই ডাল দিয়ে তৈরি করা হয় কুমড়ো বড়ি।

সরেজমিনে লালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ঘুরে দেখা যায় শীতকালের কুমড়ো বড়ি তৈরির দৃশ্য । নাগশোষা গ্রামের গৃহবধু রোকেয়া বলেন, বড়ি দেওয়ার আগের দিন মাসকলাই ডাল (স্থানীয়দের ভাষায় ঠিকরি কলাই) খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সন্ধ্যায় চালকুমড়ার খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের নরম অংশ ফেলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।

এরপর কুমড়ার পানি ঝরাতে কুমড়া মিহি করে কুরিয়ে পরিষ্কার কাপড়ে বেঁধে সারারাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে। পরদিন ভোরে ডালের পানি ছেঁকে মিহি করে বেটে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পানি ঝরানো কুমড়ার সঙ্গে প্রায় সমপরিমাণ ডাল ও পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পরে কড়া রোদে পরিষ্কার কাপড়, চাটাই বা নেটের ওপর ছোট ছোট করে বড়ি দিতে হবে। এই বড়ি ভালো করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে অনেকদিন পর্যন্ত খাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, শীত না পড়লে বড়ি ভালো হয় না। যত বেশি শীত পড়বে তত বড়ির স্বাদ বাড়বে। খেতে ভালো লাগবে।

স্কুল শিক্ষিকা সাকিরা খাতুন বলেন, তরকারিতে এ বড়ি দিলে খুব সুস্বাদু হয়। নতুন প্রজন্মের মেয়েরা এসব শিখতে বা বড়ি তৈরি করতে আগ্রহী না। তাতে আগামীতে এটা হারিয়ে যাবে।
বৃদ্ধা আলেয়া বেওয়া জানায় , তাকে বড়ি তৈরির উপকরণ ( কুমড়া , কালাই ) কিনে দিলেই বড়ি তৈরি করে দেন ।

কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা ও সিলেটে নাটোরের লালপুরের কুমড়ো বড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।