কালিয়াকৈরে হাইব্রিডদের বাদ দিয়ে পৌর কমিটি গঠনের দাবী তৃণমুলের

কালিয়াকৈর(গাজীপুর)প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের বহু কাংখিত সম্মেলন ২০১৯ কে ঘিরে দলীয় নেতা কর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সৃষ্টি হয়েছে। কালিয়াকৈর পৌরসভা গঠনের পর এই প্রথম সম্মেলন শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কালিয়াকৈর পৌর আওযামীলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলার চন্দ্রাস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী বিশ^বিদ্যালয় কলেজ মাঠ সেজে উঠেছে নতুন সাজে। পৌর আওয়ামীলীগের মুল কমিটিতে হাইব্রিড নেতাদের বাদ দিয়ে ত্যাগী নেতা কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবী জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ দলীয় তৃণমুল নেতাকর্মীরা।

কালিয়াকৈর পৌর সভা গঠনের দীর্ঘ ১৪ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ১৮ইং সালে কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ছয় মাসের জন্য ওই কমিটি গঠনের পর অদ্যবধি পৌর আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ মুল কমিটি গঠন করা না হলেও সকল জল্পনা-কল্পনা শেষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাম্মেলন। তৃনমুল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পৌর আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের নিয়ে গঠন করতে হবে ।

কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের দলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি গত ২৪-০২-১৮ইং তারিখে জেলা সভাপতির বরাত দিয়ে ১৩৫ সদস্যসের পৌর আওয়ামীলীগের একটি কমিটি গঠনের চিঠি দেন। ওই চিঠিতে পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহাবকে এবং যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে এডভোকেট বেলায়েত হোসেন, সরকার মোশারফ হোসেন জয়, মজিবুর রহমান ইয়াছিন, এডভোকেট হারুন অর রশিদ, রফিকুল ইসলাম তুষার, শরীফ মন্ডল, সানোয়ার হোসেন সরকার ও আনোয়ার হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই কমিটির দায়িত্ব ছিল তারা প্রত্যেকটি পৌর ওয়ার্ড কমিটি ও মহল্লা কমিটি গঠন করবেন।

কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের সম্মেলন ঘোষনার পর থেকে কালিয়াকৈর পৌর কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীরা কাকে দলের সভাপতি সম্পাদক বানাবেন তা নিয়ে একে অপরের সাথে মত বিনিময় করছেন। অনেকে প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন কাউন্সিলরদের সাথে সখ্যতা বজায় রাখছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতা কর্মীরা বলেন, আওয়ামীলীগের জেলা কমিটি তৎপর হয়ে নির্দেশনা দিলে নেতা কর্মীরা দল গোছাতে পারতো। দলের একাংশ ঝুট ব্যবসা নিয়ে ব্যাস্ত। অনেকে পৌর সভার বাহিরের স্থায়ী বাসিন্দা থাকা সত্ত্বেও পৌর সভায় এসে ভোটার হয়ে পৌরসভার নেতা হয়েছেন । মূলত ঝুট ব্যবসার জন্যে আসা এর মধ্যে বেশ কিছু নেতা ঝুট ব্যবসা করে প্রচুর অর্থের মালিকও হয়েছেন। কিন্ত দলকে গোছাতে কারও কোন তৎপরতা নেই। নিজের এলাকাতেই নেই তাদের দলীয় কোন তৎপড়তা। দলের মধ্যে রয়েছে আভ্যন্তরিন কোন্দল। দলটি ক্ষমতায় আসার পর অনেক ত্যাগী নেতা কর্মী হাইব্রিডদের ভীরে বঞ্চিত হয়েছেন। এ সুযোগে অনেক নতুন মুখ ফয়দা লুটে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছেন। সু-সময়ে যারা সুবিধা ভোগ করছে দু:সময়ে তাদের খুজে পাওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে অনেক নেতাকর্মী মনে করেন। সবচেয়ে বড় কথা হল কালিয়াকৈর পৌরসভা গঠনের পর কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হয়নি। পৌর কমিটি না থাকায় গত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। পৌর কমিটি গঠন করা এখন জরুরী হয়ে পরেছে। আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতা কর্মীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠনতন্ত্রের আলোকে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। পৌর আওয়ামীলীগের কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত না হলে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আরো ভাটা পড়বে বলে নেতাকর্মীরা মনে করেন।

কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও নতুন কমিটির সভাপতি প্রার্থী মজিবুর রহমান ইয়াছিন বলেন, বিভিন্ন দল থেকে যারা এসেছে তাদের আমি সমর্থন করিনা। তারাই দল থেকে সুবিধা বেশী নিয়েছে। পৌর আওয়ামীলীগের নতুন কমিটিতে কোনভাবেই যেন হাইব্রিডরা স্থান না পায় সেদিকে নেতা কর্মীরা নজর রাখবেন।

সুবিধাবাদী এ সব নতুন ও হাইব্রিড নেতাদের বাদ দিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দলকে সুগঠিত করে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। মাননীয় নেত্রীর নির্দেশিত পন্থায় কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামীলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে বলে সকলের দাবী।