কাজিপুরে খাসজমি নিজেদের কব্জায় নিতে প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে সু-পরিকল্পিত হত্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টারঃ সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে আব্দুল কুদ্দুস ও রেখা খাতুনের নামে সরকার কর্তৃক বরাদ্দ দেওয়া খাসজমি একই এলাকার মনতাজ খাঁ,আমজাদ খাঁ ও আব্বাস গংরা তাদের নিজেদের কব্জায় নিতে হাবিবুর রহমান(৪৫) হত্যার দায়ভার সু-পরিকল্পিত ভাবে আব্দুল কুদ্দুস গংদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার হীনউদ্দেশ্যে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানী করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মিথ্যা মামলার বোঝা বহন করে নিরাপরাধ লোকজনগুলো তাদের বসতবাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর এসুযোগকে কাজে লাগিয়ে  মনতাজ খাঁ,আমজাদ খাঁ ও আব্বাস আলী গংরা তাদের বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। ফলে নিরাপরাধ ব্যক্তিগুলো সঠিক তদন্তসহ ন্যায় বিচার দাবী করে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

অভিযোগ সুত্রে সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়,কাজিপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের ১৮ নং জেল এর ভানুডাঙ্গা মৌজার ১নম্বর আরএস খতিয়ানভুক্ত,আরএস ৪৩৭১ নম্বর দাগের  ০.০৯ একর জমি এক টাকা সেলামীর বিনিময়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কাজিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কবুলিয়ত দাতা হিসেবে কাজিপুর উপজেলার চরভানুডাঙ্গা গ্রামের খোশাল খার পুত্র আব্দুল কুদ্দুস ও আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী রেখা খাতুনের নামে ৯৯ বছরের জন্য (১০-০৮-২০১৫ ইং খ্রিস্টাব্দ হতে ০৯-০৮-২১১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) কবুলিয়ত করে দেন। যার  কাজিপুর উপজেলা ভুমি অফিস বন্দোবস্ত কেস নং-৪২/×π/২০১৪-২০১৫ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব)এস কেস নং-৩৪১/×π/২০১৪-২০১৫ এবং জেলা প্রশাসকের পত্র সুত্র স্বারক নং-৩১.৫০.৮৮০০.০১৮.১৮.০০২.১৩-৯৪৪/১(১) তারিখঃ ০৫/০৭/২০১৫ খ্রি. মুলে প্রাপ্ত হয়ে সেখানে একটু মাথা গোজার ঠাই হিসেবে আব্দুল কুদ্দুস ও রেখা খাতুন বসতবাড়ী নির্মাণ করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু সরকারের এই যুগোপযোগি ভুমিহীন বন্দোবস্ত সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখায় এবং ওই জমি বেদখলের চেষ্টা চালায় একই গ্রামের আজিত খার পুত্র মনতাজ খা,আমজাদ খা,হাবিবুর রহমান হবি খা ও মৃত্যু মজিবর রহমানের পুত্র আব্বাস গংরা।

এসংক্রান্ত বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেন এবং সরকারের ভুমিবন্দোবস্ত কাজে বাঁধাদান করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে সে বিষয়ে তিনি আজিত খার পুত্র মনতাজ খা,আমজাদ খা,হাবিবুর রহমান হবি খা ও মৃত্যু মজিবর রহমানের পুত্র আব্বাস গংদের সতর্ক করে দেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সেই নির্দেশকে উপেক্ষা করে তারা প্রতিহিংসা ও আক্রোশমুলক ভাবে সরকারের বন্দোবস্ত দেওয়া ওই জমি ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২ ডিসেম্বরে জোরপুর্বক ভাবে বেদখলের চেষ্টা চালায়। পরে এ অমানবিক ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নসহ কবুলিয়ত গ্রহীতা আব্দুল কুদ্দুস ও রেখা খাতুনকে পুণর্বাসিত করে যান। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বলিষ্ঠ হস্তক্ষেপের ফলে তারা দখল করতে ব্যর্থ হয়ে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং আব্দুল কুদ্দুস ও রেখা খাতুনের বসতবাড়ী ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে ব্যাপক ভাবে ক্ষতি সাধন করে। এমনকি এসময় তারা আব্দুল কুদ্দুসের ভাবী সোনেকা খাতুনেরও শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে।

এঘটনায় আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে ০৩/১২/২০১৯ খ্রিস্টাব্দে কাজিপুর থানায় আজিত খার পুত্র মনতাজ খা,আমজাদ খা,হাবিবুর রহমান হবি খা,আমজাদ খার পুত্র হানু মিয়া,স্ত্রী আমেনা খাতুন,হবি খার স্ত্রী পপি খাতুন, মৃত্যু মজিবর রহমানের পুত্র আব্বাস,জাহিদুর রহমানের স্ত্রী শাহিনুর রহমান,মৃত্যু মজিবর রহমানের স্ত্রী জাহেনা খাতুন ও হানু মিয়ার স্ত্রী শেফালী খাতুনের নামে একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-০৪। এদিকে তাদের বিরুদ্ধে আব্দুল কুদ্দুস মামলা দায়ের করায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং ওই জমি নিজেদের কব্জায় নিতে নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারী থাকায় তাদের সকল অপতৎপরতা নস্যাৎ হয়ে যায়। এতে কোন দিক দিয়ে তারা পেরে উঠতে না পেরে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩  ডিসেম্বর আব্দুল কুদ্দুসের বসতবাড়ীতে তারা পুনরায় হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষের ধস্তাধস্তিকালে সুপরিকল্পিত ভাবে তারা তাদের পক্ষের লোক যিনি দীর্ঘদিন ধরেশারীরিক ভাবে অসুস্থ হাবিবুর রহমান হবি খাকে নিজেরাই আঘাত করে আহত করে এবং পরবর্তীতে এর দায়ভার আব্দুল কুদ্দুস গংদের ঘারে চাপানোর জন্য উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়ার রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

একপর্যায়ে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারী চিকিৎসাধীন   অবস্থায় অসুস্থ হবি খা ওই হাসপাতালেই মারা যায়। এদিকে অসুস্থ সেই হবি খার মৃত্যুকে পুজি করে এক অসৎ উদ্দেশ্যের মাধ্যমে ওই জমি গ্রাস করার জন্য তারা সুপরিকল্পিত ভাবে আব্দুল কুদ্দুসসহ ৭ জনকে আসামী করে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ৩ জানুয়ারীতে কাজিপুর থানায় আলেয়া খাতুনকে দিয়ে একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।  মিথ্যা হত্যা মামলার বোঝা বহন করে নিরাপরাধ লোকজনগুলো আজ তাদের বসতবাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর এসুযোগকে কাজে লাগিয়ে  মনতাজ খাঁ,আমজাদ খাঁ ও আব্বাস আলী গংরা আব্দুল কুদ্দুস ও আব্দুস সাত্তারের বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। বর্তমানে তারা তাদেরকে নিজ বসতবাড়ীতে যেতে দিচ্ছেনা। এব্যাপারে আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী সোনেকা খাতুন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট  কাজিপুর আমলী আদালতে ২০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলটি পিবিআই’তে তদন্তাধিন রয়েছে। এদিকে নিরাপরাধ আব্দুল কুদ্দুসসহ মিথ্যা মামলার বোঝা বহনকারী ব্যক্তিগুলো সাজানো ও বানানো হত্যা মামলাসহ তাদের দায়েরকৃত ৩টি মামলার সঠিক তদন্তসহ ন্যায় বিচার দাবী করে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।