কক্সবাজারে ১৪৪ ধারা, কঠোর অবস্থানে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবিতে কক্সবাজার শহরের শহীদ মিনার সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে জেলা বিএনপি। কিন্তু একই দিন একই সড়কের অল্প দূরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয় কক্সবাজার জেলা যুবলীগ।

দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শঙ্কায় সোমবার সকাল ৮ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত শহীদ মিনার সড়কের ২০০ মিটার জুড়ে ১৪৪ ধারার ঘোষণা দেয় জেলা প্রশাসন। সকাল হতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন হয়েছে।

এদিকে, ১৪৪ ধারাতেও নিজেদের পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাসহ সমাবেশের সকল অতিথি ইতোমধ্যে কক্সবাজার এসে পৌঁছেছেন। দলে দলে আসছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে, অদৃশ্য কারণে মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শহরে একই স্থানে বিএনপি-যুবলীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান।

তবে, প্রশাসনের এই ১৪৪ ধারা ভেঙে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এজন্য দলটি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এর আগে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা আলাদা কমিটি করে ‘চল চল কক্সবাজার চল’ স্লোগানে দলটি জেলায় প্রচারাভিযান চালায়।

অন্যদিকে জেলা যুবলীগ কক্সবাজার শহরের শহীদ দৌলত ময়দানে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, অনুষ্ঠাস্থল পরিবর্তন করে সোমবার বিকেলের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য দলটির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জমায়েত হবে। সেখানেই তারা মহাসমাবেশ করবে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের মতে, মহা সমাবেশের আগ মুহুর্তে প্রশাসনের এ ১৪৪ ধারা প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ভয় পায়। তবে যত বাধাই আসুক ১৪৪ ধারা ভেঙে আমরা মহাসমাবেশ করব।

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, প্রায়ই একমাস আগে থেকে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। সেজন্য জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা চলে আসছে। এ মহাসমাবেশ বিকল্প উপায়ে আমরা করব।

কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর বলেন, শহীদ মিনার সড়কে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আমরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানস্থল পরিবর্তন করেছি। আমারা শহীদ দৌলত ময়দানে অনুষ্ঠানটি করব।

দেখা যায়, সকাল থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনেসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শহীদ দৌলত ময়দানে জেলা যুবলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জমায়েত হতে শুরু করেছে। এছাড়া বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতারা ঈদগাহ ময়দানের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছে। মহাসমাবেশের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা বিএনপির কার্যালয়, শহীদ মিনার এলাকা।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কক্সবাজার শহরের প্রবেশদ্বার থেকে পুরো শহরের প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ভোর থেকে দায়িত্ব পালন করছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে জেলা পুলিশের। কেউ যদি ১৪৪ ধারা ভাঙার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।