এমপি-চেয়ারম্যান ‘মারামারি’

জাতীয় সংসদের মেম্বারস ক্লাবে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় এমপি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার বিকালে একটি ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২৬ বছর পর আগামী ২১ জুলাই দেবিদ্বার উপজেলা সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ওই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আজ জাতীয় সংসদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ওই বৈঠকে জেলার সভাপতি ম. রুহুল আমিনসহ জেলা ও উপজেলার প্রায় ২৬ নেতা উপস্থিত ছিলেন। সভার একপর্যায়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন সরকার দাবি তুলেন- এলাহাবাদ ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা দেওয়ার। এ সময় সব সদস্য একবাক্যে তা সমর্থন করলে সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম সরকারকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আক্তারুজ্জামান স্বপনের নাম ঘোষণা করেন কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার।

এ সময় কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল কমিটি মানি না বলে ঘোষণা দেন। পাশে বসা দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ কুমিল্লা (উত্তর) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ কমিটি সুন্দর হয়েছে বললে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে মারামারি হয়।

এ ঘটনায় চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। রাত ৮টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় সন্ধ্যা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।

অপরদিকে দেবিদ্বার-চান্দিনা সড়ক অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত পৌনে ৮টায় চেয়ারম্যানের সমর্থকরা দেবিদ্বার সদরে মিছিল বের করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ককটেল বিস্ফোরণ হয়।

এতে উভয়পক্ষের মাহবুবুর রহমান, আবদুর রাজ্জাক, সাইফুল ইসলাম বাবু ও মো. সুমন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে পুরো দেবিদ্বারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম সফিকুল আলম কামাল বলেন, একজন সংসদ সদস্যের কাছ থেকে এমন ন্যক্কারজনক আচরণ আশা করিনি।

কুমিল্লা (উত্তর) জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল মতিন মুন্সী বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। বৈঠকে এমপি সাহেব উপজেলা চেয়ারম্যানকে কিল-ঘুসি মারতে মারতে মেঝেতে ফেলে দেন। পরে চেয়ারম্যান সাহেব উঠে এমপি সাহেবের ওপর চড়াও হন।

কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আবুল কাসেম সওদাগর বলেন, জাতীয় সংসদে বসে সংসদ সদস্যরা মানুষের জন্য আইন প্রণয়ন করেন আর আমাদের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে মারামারি করেন।

এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ কুমিল্লা (উত্তর) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কমিটির নাম ঘোষণার সময় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল আমাকে অতর্কিত কিল-ঘুসি মারতে শুরু করেন। মারধরের দৃশ্য সিসিটিভির ফুটেজে প্রমাণ পাওয়া যাবে।

অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার নির্বাচনি এলাকার সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।