একঝাঁক ‘নৌকাডুবানো’ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে শপথ নিলেন ঝিনাইদহ উপজেলা আ.লীগের ‘হঠাৎ নেতা’ হিরন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার)।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনে জয়লাভ করেন মাত্র ৫টিতে। একটিতে বিএনপি নেতা ও বাকীগুলোতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয় লাভ করে। যাদেরকে নৌকাডুবানো চেয়ারম্যান হিসেবে স্থানীয়ভাবে অভিহিত করা হয়।
নির্বাচনের সময় নৌকার মনোনীত একাধীক প্রার্থী অভিযোগ করেন তাদের পাশে ছিল না উপজেলা আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহীদের দলে ফেরা নিয়ে উপরের কোন নির্দেশ নেই। নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণে সেই সময় দল থেকে বহিষ্কার করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কিন্ত শপথের সময় দেখা গেল ‘হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা’ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে আলোচিত-সমালোচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরণ আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী এবং বহিস্কৃত নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে সহাস্যে শপথ গ্রহণ করতে যান এবং একসঙ্গে উপজেলা পরিষদেও যান। ছবিও তুলেন।
হিরণের সাথে ছবিতে দেখা যায় কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচিত সিরাজুল করিম, সাগান্না ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত মোজাম্মেল হক, মধুহাটি ইউনিয়নের মোটরসাইকেল প্রতীকের নির্বাচিত আলতাফ হোসেন বিশ্বাস, সাধুহাটি ইউনিয়নের মোটরসাইকেল প্রতীকের নাজির উদ্দিন,হলিধানী ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের অ্যাডঃ এনামুল হক নিলু, মহারাজপুর ইউনিয়নের চশমা প্রতীকের নির্বাচিত খুরশিদ আলম মিয়া, পদ্মকর ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের বিকাশ বিশ্বাস, দোগাছির মোটরসাইকেল প্রতীকের গোলাম কিবরিয়া কাজল, ঘোড়শাল ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের মাসুদ পারভেজ লিল্টনকে।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আছাদুজ্জামান আছাদ জানান, কেন্দ্র থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলে ফেরানো বিষয়ে কোন নির্দেশনা আসেনি। তবে স্থানীয় এমপি ভিত্তিক রাজনীতির জন্য তারা একটি সিন্ডিকেটে চালাচ্ছে হয়তো। যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছেন তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা করলেও দলীয় কোন পদ-পদবি আর পাবে না এবং দলীয় মনোনয়ন পাবে না।

শহিদুল ইসলাম হিরণ এবার নিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মত ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। তিনি ৯১ সালের পর বিএনপি সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিভাগের কাছ থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি রাজনীতির শুরু থেকে সব সময় সরকারি দল করলেও শুধু মাত্র ২০০১ সালের পর তিনি বিএনপি যোগ দিতে চাইলেও সেই সময় তাকে আর বিএনপিতে নেো হয়নি।

২০১৮ সালে হটাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে যান তিনি। আওয়ামী লীগের দলীয় শৃঙ্খলা ও সাংগঠনিক নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে একের পর বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে শহিদুল ইসলাম হিরণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সন্ত্রাসী হিসেবে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে দীর্ঘদিন কারাভোগও করেন।