ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা পরিদর্শনে ভারতীয় হাইকমিশনার

রাজশাহী ব্যুরোঃ কালজয়ী চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা রাজশাহীতে পরিদর্শন করেছেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি। বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর মিয়াপাড়া এলাকায় ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটা পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি সবকিছু ঘুরে দেখেন।

ঋত্বিক ঘটকের পৈতিৃক ভিটায় বর্তমানে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। ঋতৃক ঘটকের স্মৃতি বিজড়িত কয়েকটি ঘর এখনও অক্ষত আছে। আরেক পাশে গড়ে উঠেছে আধুনিক ভবন। এরশাদ সরকারের আমলে এনিমি প্রপার্টি হিসেবে বাড়িটি তুলে দেওয়া হয় কলেজের হাতে।

ইতিমধ্যে বাড়ির অনেকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। সম্প্রতি কলেজের সাইকেল গ্যারেজ তৈরির জন্য ভেঙে ফেলা হচ্ছিল কিছু অংশ। এরপরই প্রতিবাদ শুরু করেন রাজশাহীর সংস্কৃতিপ্রেমীরা। অবিলম্বে ভাঙার কাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।

এরি প্রতিবাদে রাজশাহীতে এবং ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ওপর বাংলা থেকেও প্রতিবাদ আসতে থাকে। ১২ জন চলচ্চিত্র পরিচালক বিষয়টি নিয়ে সংষ্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপরই প্রত্মতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে কাজ বন্ধ করার নিদের্শ দেন।

নিদের্শনা মোতাবেক বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।

প্রত্মতত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জমিটির মাপজোখ করছেন। এরই মধ্যে ঋত্বিক ঘটকের পৈতিৃক ভিটা পরিদর্শনে গেলেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার। এ সময় ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি ডাঃ এফএমএ জাহিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি সাজ্জাদ বকুল এবং হোমিওপ্যাথিক কলেজের অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার তাদের কাছে সবকিছু শোনেন। তবে এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে কোনো সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি সঞ্জিব কুমার ভাটি।

রাজশাহীর সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা এখন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে অন্যত্র সরিয়ে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটাকে জাদুঘর এবং চলচ্চিত্র কেন্দ্র করার দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, এই বাড়িতে থেকে ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেছেন। কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নাট্যচর্চাও করেছেন এই বাড়িতে থেকে। সে সময় রাজশাহীতে ‘অভিধারা’ নামের একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।