আশুলিয়ায় অস্ত্রসহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেফতার

সাভার-আশুলিয়া প্রতিনিধি : সাভারে আশুলিয়া থানাধীন শিমুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে তার আপন চাচাকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে রবিউল ইসলাম রবির বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি ও তার আরেক চাচাত ভাই জনিকে আটক করেছে র‌্যাব। রাত আড়াইটার দিকে রবি ও জনিকে আটক করা হয় বলে জানান ওই ছাত্রলীগ নেতার চাচা নজরুল ইসলাম। র‌্যাবের পক্ষ থেকে শুরুতে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও পরে শুধু রবিকে হেফাজতে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।তিনি আরও বলেন, ‘রবি আর জনি চাচাত ভাই।

রবি আমার বড় ভাইয়ের ছেলে আর জনি চাচাত ভাইয়ের ছেলে। রাত নয়টা-সাড়ে নয়টার দিকে আমার বাড়ির আশপাশে ওরা আনাগোনা করছে। আর বলছে, পামুনে আইজকা পামুনে। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব আসে। র‌্যাব আইসা আমার বাড়ির চারুমুড়া ঘেরাও করে দরজা খুলতে বলে। কয়, আপনার রুম চেক করুম। ইনফরমেশন আছে এখানে মাদক, অস্ত্র আছে।’ রবির বিষয়ে জানতে চাইলে রবিউলের বাবা বলেন আমার ছেলে অসুস্থ কয়েকদিন আগেই বাসায় এসেছে হাঁটতে পারে না। আরেকজনে ধরলে উঠে বসে। হঠাৎ করেই রাতে র‌্যাব আসে আমার ভাইয়ের বাসায়। রবিকে ওখানে ডেকে নিয়ে যায় ওনার বাড়ীতে উনার বাড়ির গ্যারেজ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে। কিন্তু আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার সময় বলছি স্যার আমার ছেলে তো অসুস্থ ওনাকে কেন নিয়ে যাচ্ছেন র‌্যাব বলেছে ওনাকে রাস্তা নিয়ে ছেড়ে দিব জিজ্ঞাসাবাদ করে কিন্তু আমার ছেলেকে র‌্যাব ছাড়ে নাই তারা নিয়ে গেছে যাওয়ার সময় আমাদেরকে বলে গেছে র‌্যাব {৪} লোক আমরা।

নজরুল ইসলামের অভিযোগ করে বলেন, আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিল শিমুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি। কিন্তু আমি এতে অসম্মতি জানাই। এর পর থেকেই সে আমাকে হয়রানি করতে থাকেন রবি। সোমবার সন্ধ্যায়ও বাড়িতে এসে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় রবি ও জনি।

পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ১০-১২ জন র‌্যাব সদস্য আমার বাড়িতে আসে। পরে গ্যারেজে লাকড়ির বস্তায় লুকিয়ে রাখা একটি অস্ত্র ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আটক করা হয় রবি ও জনিকেও। এর আগে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় আমার বাড়িতে রবি ও তার সহযোগীরা হামলা চালায়।

সব দেখে নিচে গেছে পরে র‌্যাবেরে রবি আর জনি কয়, গ্যারেজ চেক করেন স্যার। একটা পরিত্যক্ত গ্যারেজ ছিল আমার। ওইটাতে আগে অটো ভাড়া দিতাম। ওই গ্যারেজের পাশ দিয়া ৯ টার দিকে ওরা আনাগোনা করছে কয়জন।’

‘পরে র‌্যাব লাকড়ির বস্তাটস্তা বাইরাইয়া দেখে যে পিস্তল আর দুই রাউন্ড গুলি। আমি বললাম স্যার, অত্র এলাকায় গিয়ে তদন্ত করেন দেখবেন দশ ট্যাকার অপরাধ পাবেন না আমার। ওরা এহানে বইসা রইছে এগুলি অগো ছাড়া আর কারো কাম না স্যার। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে গ্যারেজের সামনে থাইকা অগো ধইরা নিয়া গেছে। র‌্যাবের কমান্ডার রাকিবসহ দশ-বারোজন র‌্যাব আসছিল।’

অস্ত্র দিয়ে কেন আপনাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অরাইতো ইনফরমেশন দিয়া র‌্যাব আনছে। র‌্যাব অবশ্যই জানে, আমি অপরাধী না কি? জনির নামে মাদক মামলা আছে। অ্যার আগে রবি মদ খাইয়া গাড়ি চালাইতে গিয়া রাত ১টার দিকে এক জায়গায় অ্যাকসিডেন্ট করছে। হাসপাতাল থাইকা গত বৃহস্পতিবার সুস্থ হইয়া আইছে।’

আইনগত পদক্ষেপ নেবেন কি না এমন প্রশ্নে বলেন, ‘আমি এখনো জিডি করিনি। তবে আইজকা জিডি করব।’

অভিযোগ ও আটকের সত্যতা জানতে ফোন করা হলে শিমুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবির মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এরকম কোন ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই দোষীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আটকের বিষয়ে র‌্যাব-৪ (সিপিসি-২) শাখার কোম্পানুু কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।