আরএসএসের দফতরে যাওয়ার জন্যই কি ‘ভারতরত্ন’ প্রণব?

সংবাদ সংস্থা : ভারতরত্নের জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যেও এর বিরোধিতা শুরু করেছেন কেউ কেউ। এ বার ভারতরত্নের মতো সম্মানের পিছনে রাজনৈতিক অঙ্ক থাকার দাবি তুললেন সংযুক্ত জনতা দলের নেতা দানিশ আলি। নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সভায় যোগ দেওয়ার জন্যই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করেছেন তিনি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

ভারতরত্নের জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম সামনে আসার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। শুক্রবারই দিল্লির এক আপ নেতা প্রণববাবুর ‘ভারতরত্ন’ সম্মানের পিছনে সঙ্ঘের সভায় যোগদানই কারণ বলে টুইট করেছিলেন। তিনি টুইট করেন, ‘সঙ্ঘের শাখায় এক বার যাও, আর রত্ন হয়ে যাও।’ এ বার সেই বিতর্কের আগুনে ঘি দিলেন ওই জেডিএস নেতা। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘আরএসএসের সদর দফতরে সভায় যোগ দিয়ে এবং সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠাতা হেগড়েওয়ারকে ভূমিপুত্র বলার জন্যই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভারতরত্ন দেওয়া হল।’’ বরং প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বদলে ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজু পট্টনায়েক, প্রয়াত দলিত নেতা কাঁসিরাম— যাঁরা জনগণের জন্য অনেক কাজ করেছেন কিংবা সিদ্দাগঙ্গা মঠের শ্রী শ্রী শিবকুমার স্বামীজিকে এই সম্মান দেওয়া উচিত ছিল বলে তাঁর মত। জেডিএস নেতা দানিশ আলির হুঁশিয়ারি, ‘‘শিবকুমার স্বামী এক মহান ব্যক্তি ছিলেন। তাঁকে এই সম্মান না দেওয়ার জন্য কর্নাটকে বিজেপিকে ফল ভুগতে হবে।’’

ভারতরত্ন সম্মানের জন্য শুক্রবার তিন জনের নাম ঘোষণা করা হয়। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, জনসঙ্ঘের নেতা নানাজি দেশমুখ আর অসমের ভূমিপুত্র, গায়ক ভূপেন হাজরিকা। এই তিন নামের পিছনেই রাজনৈতিক অঙ্ক রয়েছে বলে কানাঘুষো চলছিল দিল্লিতে ক্ষমতার অলিন্দে ঘোরাফেরা করা অনেকের মধ্যেই।

কী রকম অঙ্ক? তাঁদের মতে, হিন্দি বলয়ের জমি ক্ষয় হতে শুরু হওয়ায় আসন্ন লোকসভা ভোটে পূর্ব ভারতই বিজেপির চোখ। তাই প্রণববাবুকে ভারতরত্ন দিয়ে বাংলার মন জয় করার চেষ্টা করলেন মোদী। একই ভাবে নাগরিকত্ব বিলকে ঘিরে অসমিয়াদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে ভুপেন হাজারিকাকে এবং সঙ্ঘের মন রাখতে নানাজি দেশমুখকে ভারতরত্ন দেওয়া হয়।

সঙ্ঘের সদর দফতরে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের যোগ দেওয়াটাও কংগ্রেস মেনে নিতে পারেননি। তবে ভারতরত্ন নিয়ে বিতর্ক তারা জিইয়ে রাখতে চাইছে না। তাই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানানো ছাড়া আর কোনও মন্তব্য করেনি কংগ্রেস। প্রণব মুখোপাধ্যায় নিজেও এই বিতর্ক নিয়ে কোনও কথা বলেননি এখনও।