আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনদিন ধরে নিখোঁজ পুলিশ সদস্য আঃ রাজ্জাক।

এসএম রুবেল
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশ লাইন্সে কর্মরত এক পুলিশ কনস্টেবল গত তিন দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত মঙ্গলবার (০৫ আগষ্ট) চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে পুলিশ লাইন্সে আর ফিরে আসেননি তিনি। গত তিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন কনস্টেবল মো.আব্দুর রাজ্জাক (৩০)। কনস্টেবল নাম্বার ৫৩০
বিপি নাম্বার ৯৩১৩১৬১২১০
বর্তমানে,পুলিশ লাইনে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।

এদিকে,কর্মস্থলের মতোই বাড়িতেও যাননি ওই পুলিশ সদস্য। পরিবারের পক্ষ থেকে এনিয়ে তাকে খোঁজাখুজি চলছে বলে জানায় পুলিশ কনস্টেবল আব্দুর রাজ্জাকের বাবা। এমনকি তার মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে। এনিয়ে বাবার দাবি আমার ছেলের জন্য দেউলিয়া হয়েছে তার পরিবার ও বাবা মা রয়েছে তার দুইটি কন্যা সন্তান।

জানা যায়,পুলিশ কনস্টেবল আব্দুর রাজ্জাক রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলার হাট গাঙ্গোপাড়া চাঁইসারা গ্রামের মো.রফিকুল ইসলামের ছেলে। গত প্রায় দুই মাস আগে ডোপ টেস্টে পজেটিভ হওয়ার কারনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। এছাড়াও বৃহস্পতিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সুপার বরাবর তার বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা ধার নিয়ে শোধ না করে আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাংবাদিক এসএম রুবেল।

অভিযোগ রয়েছে,তার নামে প্রতারণা করার একাধিক অভিযোগ নয়াগোলার এক দোকানদার কাবিরের কাছ হতে সাড়ে তিন হাজার টাকা সদায় বাকি নেয় তার কাছে হতে এদিকে বহু মানুষের কাছ হতে অগ্রিম টাকা নিয়ে কিছু শোনা রুমে জমা দিয়ে উঠাই তার নামে টিভি এসি ফ্রিজ দেয় বিক্রি করে একাধিক লোকের নিকট,ওয়ালটন ও কামাল ইলেকট্রনিকস শোরুম থেকে কয়েকটি ফ্রিজ উঠানোর কথা বলেও বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেন কনস্টেবল আব্দুর রাজ্জাক। বালুবাগান এলাকার তারেক রহমান ৩০ হাজার ও বারোঘরিয়া নতুন বাজারের কালু তার কাছে ৭৫ হাজার টাকা পাবে পাবে টাকা একাধিক শোনা রুমে।

এছাড়াও নয়াগোলা স্কুলের সামনের ভাতের দোকানদার সাড়ে ৭ হাজার টাকা পাবে আব্দুর রাজ্জাকের কাছে। শিবগঞ্জ জলবাজারের আরেক দোকানদার তার কাছে ১১ হাজার টাকা ও সরকারের মোড় এলাকার দুরুল পাবে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। এছাড়াও মেলার মোড় এলাকার আরেক ব্যবসায়ী রিপন পাবে ১৫ হাজার টাকা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ ইন্সপেক্টর (আরআই) মো. জিল্লুর রহমান জানান,গত মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) আদালতে সাক্ষ্য দিতে যায় কন্সটেবল আব্দুর রাজ্জাক। এরপর থেকে লাপাত্তা রয়েছেন তিনি। গত তিনদিন ধরে কর্মস্থলে গরহাজির রয়েছেন আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে।

নিখোঁজ পুলিশ সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন,গত তিনদিন ধরে তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। এমনকি বাসাতেও আসেনি আমার ছেলে। তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি চলছে। পরিবারের কারো সাথেই কোন কথা বা যোগাযোগ নেই তার। কোথায় আছে,কি অবস্থায় আছে কিছুই জানি না। ইতোমধ্যে বিষয়টি পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কল্যানপুর এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক এসএম রুবেল জানান,গতমাসের ১৪ তারিখে বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে বলে আমার কাছে ১ লাখ টাকা ধার নেই কনস্টেবল আব্দুর রাজ্জাক। এমনকি এর বিনিময়ে একটি ব্যাংক চেক,স্ট্যাম্পে সাক্ষর,জাতীয় পরিচয়পত্র ও পুলিশের পরিচয়পত্রের ফটোকপি দেন তিনি। ১৫ দিনের জন্য টাকা ধার নিলেও দিব-দিচ্ছি বলে নানারকম টালবাহানা করছিলেন গত কয়েকদিন থেকে। পরে তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।

এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবুল কালাম শাহিদ বলেন,গত তিনদিন ধরে পুলিশ কনস্টেবল আব্দুর রাজ্জাক কর্মস্থলে অনুপস্থিত না থাকায় গরহাজির রয়েছে। সে ডোপ টেস্টে পজেটিভ থাকায় সাময়িক বরখাস্ত ছিল। অন্যদিকে,তার বিরুদ্ধে ধার নিয়ে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।