আত্রাইয়ের জমির আগাছা অপসারণ যেন কৃষকের গলার কাটা

আল আমিন মিলন, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা সবুজ প্রকৃতির আমাদের এ বাংলাদেশের উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ৮ ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠে এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
এ উপজেলায় এবার বন্যা কম হওয়ায় বোরো চাষের জমিতে প্রচুর পরিমাণ ঘাষ (আগাছা) জন্মেছে। আগাছাগুলো যেন কৃষকের গলার কাটাতে পরিণত হয়েছে। এসব আগাছা অপসারন করতে কৃষকরা হিমসিম খাচ্ছে। আসন্ন বোরো চাষ করতে এসব জমির আগাছা অপসারন করতে কৃষকদের প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা বাড়তি খরচও হচ্ছে।

জানা যায়, প্রতি বছর এ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর অধিক জমিতে রবি শষ্য চাষ করা হয়। আত্রাই উপজেলা বন্যাকবলিত উপজেলা হিসেবে বর্ষা মৌসুমে উপজেলার অধিকাংশ মাঠ পানির নিচে তলিয়ে থাকে। ফলে এ জমিগুলোর ঘাষ ও আগাছা পঁচে গিয়ে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এতে করে এ অঞ্চলের জমিগুলোতে বোরো ধানের ফলনও বাম্পার হয়। কিন্তু এবারে বন্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ মাঠে প্রচুর পরিমাণ ঘাষ (আগাছা) জন্মেছে। বোরো বীজতলা প্রস্তুত করতে এখন থেকেই কৃষকরা মাঠে নেমে পড়েছেন। বীজতলা প্রস্তুতির সাথে সাথে বোরো চাষের জমিগুলোও এখন থেকেই পস্কিার করতে শুরু করেছেন। সরে জমিন ঘুরে বেশ কয়েকটি মাঠে দেখা গেছে কৃষকরা বোরো চাষের জন্য জমির আগাছা পরিস্কার করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আজাদ প্রামানিক বলেন, এবারে আমাদের মাঠে বন্যার পানি খুবই কম প্রবেশ করেছে। যার জন্য জমিগুলোতে প্রচুর পরিমাণ ঘাষ (আগাছা) জন্মেছে। ওষুধ দিয়েও এ আগাছা নির্মূল করা যাচ্ছে না। শ্রমিক দিয়ে এ আগাছা পরিস্কার করতে বিঘা প্রতি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। এ ছাড়াও এবারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও সার সঙ্কটে আমরা বোরো চাষ নিয়ে শঙ্কিত অবস্থায় রয়েছি।

উপজেলার ভবানীপুর বøকের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মার্জিয়া পারভিন বলেন, ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কৃষকরা যেন বোরো চাষে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের কাঙ্খিত ফসল অর্জনে ব্লক পর্যায়ে ক্যাম্পেইনসহ নানা ধরণের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, যেহেতু এবারে এ অঞ্চলে বন্যা কম হয়েছে তাই মাঠের জমিগুলোতে আগাছা বেশি জন্মেছে। এসব আগাছা পরিস্কার করে পঁচিয়ে ফেলতে পারলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। যতদূর সম্ভব বোরো চাষের জমিতে কীটনাশক কম ব্যবহারের জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।