আজ শেষ হচ্ছে ডাকসুর প্রচারণা; অধীর অপেক্ষায় ভোটাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ ২৮ বছর পর আবারও সচল হচ্ছে ডাকসু। শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের প্রার্থীরা। একদিন বাদেই ভোট। আজ শনিবার মধ্যরাত থেকেই থেমে যাচ্ছে প্রচারণা।

১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় দিনভর প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা। সকাল থেকেই প্রচারণার কেন্দ্র ছিল হলগুলো। আজও অব্যাহত থাকবে হলে প্রচার প্রচারণা। গতকাল ছুটির দিন হওয়ার ক্যাম্পাসে প্রচারণা কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীরা হলে হলে প্রচারণা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রুমে রুমে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চান প্রার্থীরা।ৎ

গত ৩ মার্চ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, বামসহ বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নির্বিঘ্নে প্রচার প্রচারণা চালালেও কিছু কিছু হলে বাধার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ ছাত্রদল ও আরও দু’একটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের। নিজ নিজ হলের প্রার্থীরা হলের গেট, ক্যান্টিন এবং টিভি রুমে নিজেদের ব্যানার-পোস্টার টানিয়েছেন। রুমে রুমে গিয়ে বিতরণ করছেন লিফলেট।

২৮ বছর পর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ঢাবির প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী। নির্বাচনের বিষয়ে প্রশাসনের উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানান। যদিও ভোটের পরিবেশ নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা শঙ্কাবোধও কাজ করছে।

দর্শন বিভাগের ছাত্র রাসেল বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলে করায় অনেকেই হলে ভোট দিতে যাবেন না। আমাদের অনেক ছাত্রই হলের বাইরে থাকে। তাছাড়া ছাত্রলীগের বাইরে যারা ভোটার আছেন তারা হলে ভোট দিতে চাইবেন না। কেননা, এ নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের মতো হতে পারে। কিন্তু এমনটা হলে বিশ্ববিদ্যালয় তার ঐতিহ্য হারাবে।

শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থী দেলোয়ার বলেন, আমি ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। ২৮ বছর পর আমরা ভোট দিবো, ভাবতেই ভালো লাগছে। আশা করি, এবারের ডাকসু নির্বাচন ডাকসুর ইতিহাসে রোল মডেল হয়ে থাকবে।

যদিও নির্বাচনে ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী যিনি ছাত্রদলের কর্মী এবং হলের বাইরে থাকেন; তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ মোটামুটি রয়েছে। তবে আশঙ্কা করছি আমরা যারা হলের বাইরে থাকি তারা ভোট দিতে পারবো কি? নাকি এখানেও জাতীয় নির্বাচনের মতো আগের রাতেই বাক্স ভরে রাখা হবে?

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার আশা প্রকাশ করেছেন ডাকসু ও হল নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমান। তিনি জানান, আমরা এই নির্বাচনকে ঘিরে সদা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল পরিবেশ যাতে কোনোক্রমেই বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসন সতর্ক থাকবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।

ডাকসু নির্বাচনে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দেয়ার জন্য প্রতি হলে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টি বুথ থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দ্রুত ভোট গণনায় ব্যবহার করা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। হল সংসদের ফলাফল হল থেকে আর কেন্দ্রীয় সংসদের ফল ঘোষণা করা হবে সিনেটের পক্ষ থেকে।

ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদ এবং হল সংসদের জন্য থাকবে আলাদা ব্যালট পেপার। পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে ক্রস দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন শিক্ষার্থীরা।

১১ মার্চ ভোটের দিন ক্যাম্পাসে কেবল স্টিকারযুক্ত পরিবহন চলাচল করতে পারবে। ভোটগ্রহণের সময় ৮ থেকে ২টা পর্যন্ত নির্ধারিত থাকলেও দুপুর ২টার মধ্যে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারা সব ভোটারই ভোট দিতে পারবেন।