আওয়ামী লীগের সামনে ৩ ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র ৬ দিন। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যদি ভোট গ্রহণ হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের বিজয় নিয়ে কারোরই কোন দ্বিমত নেই। তারপরও নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই আওয়ামী লীগের জন্য ঝুঁকি বাড়ছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আগামী ৭ দিন অনেকগুলো ঝুঁকি অতিক্রম করতে হবে আওয়ামী লীগকে। আওয়ামী লীগের সামনে যে সমস্ত ঝুকিগুলো রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে..

১. নির্বাচনের আগে বড় ধরনের সংঘাত ও সহিংসতার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে বড় ধরনের নাশকতার নীল নকশা আঁকা হয়েছে। গোয়েন্দারা বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য সর্ব্বোচ্চ সতর্কতা অবস্থা জারি করেছে। আওয়ামী লীগ খুব ভালোমতই জানে নির্বাচনের আগে বড় ধরনের কোন নাশকতা বা সহিংসতা যদি ঘটে, তা নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলবে। তাতে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্থ এমনকি বাতিলও হয়ে যেতে পারে। নির্বাচন যদি শেষ পর্যন্ত বানচাল হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ যে দলটি হবে তা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

২. নির্বাচনের উদ্দেশ্যে সোমবার থেকে সেনাবাহিনী মাঠে নামবে। মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনী কি ভূমিকা পালন করে সেটার উপর নির্ভর করছে অনেককিছুই। ২০০১ সালের নির্বাচনে দেখা যায়, সোবাহিনী মাঠে নেমে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু তা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে চলে গিয়েছিল। এবারও সেনাবাহিনী কী রকম ভূমিকা পালন করে সেটার উপর আওয়ামী লীগের অনেককিছু নির্ভর করছে। যদিও আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা আশা করছেন যে, সেনাবাহিনী সুষ্ঠু ভাবে দায়িত্ব পালন করবে এবং সেনাবাহনী নির্বাচনে দায়িত্ব গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন বানচালের আশংকা দূর হয়ে যাবে। অনেক রাজনীতিবিদ বিশ্লেষক মনে করছে যে , সেনাবাহিনী মাঠে নামলে তা আওয়ামী লীগের জন্য ঝুঁকির কারণও হতে পারে।

৩. নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিএনপি জামাত এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যদি কোন বড় ধরনের অবরোধ বা সহিংসতা বা ভোট বর্জন করে আন্দোলনের ডাক দেয়। সেটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় ঝুঁকির কারণ হবে। সেই পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ কিভাবে মোকাবিলা করবে, সেটাই হলো বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন যে, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান করাটাই হবে আওয়ামী লীগের বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ বাংলাদেশে দলীয় সরকারের আমলে নির্বাচনের রেকর্ড নেই। এবারই প্রথম দলীয় সরকারের অধীনে একটা অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে যদি সকল দল থাকে। সেটাই হবে গণতন্ত্রের জন্য। নির্বাচন কমিশন এবং ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য একটা বড় বিজয়।’

কিন্তু এই ঝুঁকিগুলো অতিক্রম করে দলীয় সরকারের অধীনে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা। সেটা দেখা যাবে ৩০ ডিসেম্বর।