তৈয়ব আলী জোয়ার্দ্দার : আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে যে, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিল অধিবেশনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করবেন। এমনকি কাউন্সিল ডিসেম্বরের আগেও অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো সাধারণ সম্পাদক পদ। কারণ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, আস্থাভাজন এবং তার কোনো বিকল্প নেই। ১৯৮১ সাল থেকে দীর্ঘ ৪১ বছরের বেশি সময় তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের একটি অনন্য রেকর্ড।
আওয়ামী লীগের নেতারাই স্বীকার করেন যে, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনা নিজেই। আর এরকম বাস্তবতায় আগামী কাউন্সিলে সভাপতি নিয়ে যে কোনো আলোচনা হবে না সেটি বলাই বাহুল্য। শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত থাকবেন ততদিন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অন্য কেউ নিজের অবস্থান কল্পনাও করতে পারেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার বিকল্প কাউকে ভাবেন না। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন এটি নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই মেন করে এবার কাউন্সিলে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন হবে এবং এই পরিবর্তনের ফলে কে সাধারণ সম্পাদক হবেন এই নিয়ে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে। আবার এ ব্যাপারে অনেকে অনেক মতামত দিচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে পঁচাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় এসেছে তারা সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আওয়ামী লীগ সভাপতির উপর। তিনি কাকে সাধারণ সম্পাদক করবেন সেটি হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রভাবশালী একটি মহল মনে করছেন যে, সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো চমক নয় বরং ওবায়দুল কাদেরই হ্যাট্রিক করবেন। ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবেই আবার রাখা হবে এমন ভাবনা আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। তাদের পক্ষে যুক্তি হলো যে, সামনে নির্বাচন। নির্বাচনের আগে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন করা হবে না। দ্বিতীয়ত, অনেকেই মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগের ভেতরে নানারকম কোন্দল মেরুকরণ যেকোনো একজনকে সাধারণ সম্পাদক করলে দলের মধ্যে নানারকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে হয়তো সাধারণ সম্পাদক পদে আগের ভারসাম্য হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকেই রাখা হতে পারে।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, বাহাউদ্দিন নাছিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, মির্জা আজমসহ কয়েকজনের নাম বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তা চূড়ান্ত করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।