আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনেই ইভিএমে ভোট করার দাবি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ইসিতে এ প্রস্তাব জমা দেয়।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরুল্লাহ, ড. আব্দুল রাজ্জাক, ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. হাসান মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও তথ্য সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, শিক্ষা সচিব মো. শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
আওয়ামী লীগের পেশ করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশের সংবিধান ও ইসি আইনে বলা হয়েছে, সব নির্বাচন কোনো সরকারের অধীনে নয়, একটি নির্বাচন কমিশনের অধীনে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সরকারকে অবশ্যই ইসিকে সহযোগিতা করতে হবে এবং ইসি যতদিন নিরপেক্ষ থাকবে ততদিন সরকারের নির্বাচন প্রভাবিত করার সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনী সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে নির্বাচনের সময় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানায়। এছাড়া নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা সব কর্মকর্তার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ইসিকে অনুরোধ করেছে দলটি। বিশেষ করে কিছু “বিএনপি কর্মী” যারা আগে বিএনপি শাসনামলে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
সব ভোটারের ছবিসহ একটি যাচাইকৃত ভোটার তালিকা প্রকাশের পাশাপাশি নির্বাচনের দিন সব ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তার কথাও বলেছে আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলটি বলেছে, ভোট কারচুপি ঠেকাতে ইভিএম ব্যবহারের বিকল্প নেই।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, “আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিতে চায়। ভোট ডাকাতি ও কারচুপি বন্ধ করতে ইভিএমের বিকল্প নেই”।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য আরও ইভিএম কিনতে চায়, কারণ ইসির কাছে বর্তমানে ১৫০,০০০ ইভিএম রয়েছে, যা মোট ৪৩,০০০ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৩,০০০টির জন্য যথেষ্ট।
দলটি বেসরকারী সংস্থার কর্মীদের পরিবর্তে পোলিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসার পদে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহারের প্রস্তাব করেছে।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিধি বজায় রেখে ইসির উচিত বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা।
স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগে ইসিকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন দল একটি “পেশী ও অর্থ ব্যবস্থা-মুক্ত” নির্বাচন চায়, যেখানে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ভোটারসহ প্রত্যেক ব্যক্তি কোনো ভয় ছাড়াই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
আওয়ামী লীগ বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটি “অতীত এবং বন্ধ অধ্যায়” কারণ এটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেছে।
দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুপারিশের জন্য গত ১৭ জুলাই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে ইসি।
মোট ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিসহ নয়টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি।