যাত্রীবান্ধব গণপরিবহণের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

উন্নত যোগাযোগের জন্য বাস্তবায়িত হচ্ছে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় প্রকল্প। কিন্তু এর মাঝেই যাত্রী কল্যাণের বিষয়টি ঘুরেফিরে আটকে যাচ্ছে অজানা বৃত্তে। কেন? গত ১৩ জুন ট্রেনের টিকেট কিনতে গিয়ে “প্রতারণার শিকার হন” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। পরে ৭ জুলাই থেকে তিনি অবস্থান নেন কমলাপুর রেল স্টেশনে।

ছয় দফা বাস্তবায়নে তার স্মারকলিপির জবাবে দাবি মানার আশ্বাস দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নন রনি। তিনি বরং বলছেন, “একজন বাবা বাচ্চাদেরকে যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বোঝান, রেলের মহাপরিচালকও সেভাবে তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন।”

তিনি বলেন, “উনার কথার টোন আমার ভালো লাগেনি। উনার কাছে নাকি কেউ অভিযোগও জানায়নি।” অভিযোগ জানাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দুর্নীতি চালিয়ে নিতে অভিযোগ জানানোর পথ রেল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করতে চায়।”

এক প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দিন রনি জানান, আন্দোলনের বিষয়টি শুরুতে তার মাথায়ও আসেনি। কেবল চেয়েছিলেন, তার সঙ্গে যেটা ঘটেছে, সেটা যেন আর কারো সঙ্গে না ঘটে। এর জন্য তিনি নানাভাবে চেষ্টা করে গেছেন, শেষ পর্যন্ত অবস্থান নিয়েছেন কমলাপুরে। দুইদিনের মাথায় পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করলে এটি আন্দোলনে রূপ নেয়।

এরই মাঝে রনির অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানির পর গত ২০ জুলাই রেলওয়ের টিকেট বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত কোম্পানি সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এই জরিমানার টাকার ২৫% পাবেন রনি।

এদিকে বিষয়টিতে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। শুনানির এক পর্যায়ে ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহণ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। বিষয়টি এখনো বিচারাধীন থাকায় আদালত থেকে যাত্রী কল্যাণে আরও নির্দেশনা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে রনি এখন আর নিজের কথা ভাবছেন না। তিনি ভাবছেন দেশের সব যাত্রীর কথা। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে রেল খাতে অব্যবস্থাপনা দূর করেই ঘরে ফিরতে চান তিনি। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী একবার আশ্বাস দিক যে, দাবিটি মানা হবে। এরপর আমরা তার পাশে থেকে এমনভাবে কাজ করবো, যাতে তার স্টেটমেন্ট ব্যর্থ না হয়।”

“প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিলে আমরা ছাত্র-শিক্ষক-গবেষকরা বসে সমাধানের পথ বের করবো। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবো। আমি ছাড়ার পাত্র নই।”