বাগেরহাট প্রতিনিধি
মোংলা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে মোঃ রনি (৩৫)’র বিরুদ্ধে এক শিশু (১০) গৃহপরিচারিকাকে যৌন নিপীড়নসহ শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ ঘটনা তদন্ত করে ইতোমধ্যে রনিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (তদন্ত প্রতিবেদন) দাখিল করেছেন। বাসায় কাজের কথা বলে ওই শিশুটিকে খুলনা থেকে মোংলায় নিয়ে এসকল ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়।
এ মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও গ্রেফতার হয়নি।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, খুলনার লবনচরা থানাধিন মোক্তার হোসেন সড়কের বাসিন্দা রাকিব তালুকদারের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর শিশু কন্যা (১০)কে গত বছর লালন-পালনের কথা বলে মোঃ রনি মোংলায় নিয়ে যান। মোংলার বাতেন সড়কে অবস্থিত বাড়িতে নিয়ে রনি ওই শিশুটিকে প্রায় সময় যৌন নিপীড়ন চালাতো। এবং বিষয়টি কাউকে না বলতে ওই শিশুটিকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দিতেন। শারীরিক নির্যাতনও চালাতেন।
এছাড়া রনি’র স্ত্রী রীমা (৩২) ওই শিশুটিকে মারাত্বকভাবে নির্যাতন করতো বলে অভিযোগে বলা হয়। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট সারাদিন বাসার কাজ করে শিশুটি রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে রনি’র এসে ওই শিশুটিকে বিবস্ত্র করে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষনের চেষ্টা করে। পরদিন সকালে ওই শিশুটি বাসার একটি মোবাইল ফোন থেকে কৌশলে খুলনায় তার ফুফু মানজুম আক্তারকে ফোন করে এসব কথা জানায়। শিশুটির বাবা ও ফুফু মোংলায় গিয়ে তাকে খুলনায় নিয়ে আসেন। পরদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)তে ভর্তি করেন।
এঘটনায় গত বছরের ৩সেপ্টম্বর খুলনা সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ না নিয়ে আদালতে যেতে পরামর্শ দেন। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শিশুটির ফুফু বাদি হয়ে পিটিশন দায়ের করেন (নং-৯৬/২১)। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দেন। ২৮ অক্টোবর খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুমি আহমেদ ওই ভিকটিমের ২২ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র পুলিশ পরিদর্শক মনজুরুল হাসান মাসুদ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আসামি রনি’র বিরুদ্ধে ওই শিশুকে যৌন নিপীড়ন ও শারীরিক নির্যাতনের অপরাধে জড়িত বলে অভিযুক্ত করেন।