বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট অব্যস্থাপনার দায়ে সহজ ডট কমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫৩ ধারায় এই জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২০ জুলাই) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে ঢাকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থানকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির অভিযোগের শুনানি হয়। শুনানিতে রনির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ জরিমানা করা হয়।
মহিউদ্দিন রনির উপস্থিতিতে শুনানিকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, “মহিউদ্দিন রনির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সহজ ডটকমের অবহেলা প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে সহজ ডটকম-কে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, রেল অফিসারদেরও জবাবদিহিতার জন্য দ্রুতই ডাকা হবে। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে। জরিমানার পুরো অর্থের ২৫% অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা পাবেন অভিযোগকারী মহিউদ্দিন রনি।
এদিকে, এ বিষয়ে সহজ ডটকমের আইনজীবী মির্জা রাগিব হাসনাত ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা এই রায়ের সঙ্গে একমত নন। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য গত ১৩ জুন মহিউদ্দিন রনি বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢাকা-রাজশাহীর টিকিট কাটার চেষ্টা করেন। অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমে বিকাশ থেকে ভ্যারিফিকেশন কোড পাঠানো হয়। কিন্তু পিন নম্বর দিয়ে সেটি নিশ্চিত করার আগেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে টিকিটের মূল্য কেটে রাখা হয়।
ঘটনার পর রনি দ্রুত কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলওয়ের সার্ভার রুমে অভিযোগ করেন। সেখান থেকে কারণ হিসেবে জানানো হয়, সিস্টেমের কারণে এমন হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত না পেলে রনিকে অভিযোগ করতে বলা হয়।
রনি জানান, নিজের চোখের সামনে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তার বুকিং করা ৬৮০ টাকার আসনটি আরেক যাত্রীর কাছে ১,২০০ টাকায় বিক্রি করেন স্টেশনের কম্পিউটার অপারেটর। রনি এরপর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে ১৪ এবং ১৫ জুন দুবার অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে দেশের রেলওয়ে প্রশাসনের দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা বন্ধে গত ৮ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি। দাবি আদায়ে মঙ্গলবার দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলভবন পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি (লং মার্চ) পালন করেন।
পরে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে তিনি নিজের দাবি ও অভিযোগ সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেন রনি।