ঝিনাইদহের মধুহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস এখন ঘুষ ভবন, নেপথ্যে তুপসি খাতুন

এম মাসুম আজাদ, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রকাশ্যে চলছে ঘুষ বাণিজ্য। সেবা প্রার্থী জনগনকে জিম্মি করে ১১৫০ টাকার পরিবর্তে জমি খারিজের জন্যে নিচ্ছেন ৩৫০০ টাকা। যদিও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির নাম পত্তনের কাজ করা হয় না তবুও অফিস সহকারী তুপসি খাতুন সহজ সরল জনগণকে ভুল বুঝিয়ে ভয় দেখিয়ে তিন চার গুন বেশি নিচ্ছেন টাকা। এই তুপসি খাতুন অফিসটাকে ঘুষের ভবনে পরিণত করেছেন।

স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণের অভিযোগ, মধুহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী তুপসি খাতুনের ঘুষবাণিজ্যের বিষয় অনেকটা ওপেন সিক্রেট। তিনি সেবা প্রার্থীদের বলেন, আপনারা এসিল্যান্ড অফিসে গেলে হয়রানি হবেন। আমার কাছে ৩৫০০ টাকা দিয়ে গেলে আমি সব কাজ করে দেব।

তুপসি খাতুন পাঁচটা জমির নাম পত্তন করার জন্যে টাকা নিলেন ১৭৫০০ /- (সতের হাজার পাচঁ শতো টাকা) আর জমি যদি একটি হয় সে ক্ষেত্রে ৪৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

সরেজমিন গেলে তুপসি খাতুনকে এক ভুক্তভোগীর কাছে মুঠোফোনে ঘুষের টাকার জন্যে তাগাদা দিতে দেখা যায়। মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমার সাথে এসিল্যান্ড সারের খুব ভালো সম্পর্ক আছে আমার অনেক ক্ষমতা আমি দুই নাম্বার জমি জালিয়াতির কাজ করে দিতে পারি। তিনি তখন আবারও ১৭০০০/- টাকা দাবি করেন।

এই তুপসি খাতুন, কথায় কথায় ভূমি কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে তিন চার গুণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কার অনুমতিতে..? তার ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে মধুহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুন্সী জহুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ধরনের কোনো অবৈধ কাজের সুযোগ আমাদের এখানে নেই, আর যদি কেউ কোনো ধরনের অবৈধ বা অনৈতিক পন্থায় ঘুষ গ্রহণ করেন তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোজ নিয়ে আরো জানা গেছে, তুপসি খাতুন এবং অন্যে একজন অফিস সহকারীকে দেখা যায় যারা উভয়ই নায়েবের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যে ঘুষ খাচ্ছেন। তবে সাংবাদিক পরিচয়ে তুপসির কাছে জানতে চাইলে তুপসি খাতুন ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।

স্থানীয় সুশীল সমাজের মনে প্রশ্ন, এভাবে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্য চলছে কিন্তু এই সকল ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে কেনো কোনো স্থায়ী ব্যববস্থা নেওয়া হচ্ছে না? তবে কি এই তুপসি খাতুন যাদের নাম ভাঙ্গিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন, এই টাকার ভাগ সেখানেও পৌছে যায়?

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি এই সকল বিষয়ে আরো কঠোর ব্যবস্থা নিবেন বলে আশা করছেন ভুক্তভোগী জনগণের। এছাড়াও ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী জনগণ।