নিজস্ব প্রতিবেদক
ডা. জোবায়দা রহমান তারেক জিয়ার স্ত্রী। তারেক জিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি লন্ডনে যাওয়ার আগে সরকারি চাকরি করতেন। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে তার সরকারি চাকরি চলে গেছে। একজন চিকিৎসক হয়েও তিনি তারেক জিয়ার ঘরকন্না ছাড়া তেমন কিছুই করছেন না। বিএনপিতে ডা. জোবায়দা রহমানের জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং প্রায়ই তারেক জিয়ার বিকল্প নেতা হিসেবে ডা. জোবায়দা রহমানের নাম আলোচিত হয়। কিন্তু স্বামীর অপকর্মের দায় তাকেও নিতে হচ্ছে, স্বামীর দুর্নীতির মামলার অংশীদার হয়েছেন তিনিও। তার দুর্নীতির মামলা বাতিলের জন্য একটি আবেদন করা হয়েছিল কিন্তু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে যে, জোবায়দার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলবে। এর ফলে জোবায়দাকে নিয়ে বিএনপি’র একটি পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। কি ছিল সেই পরিকল্পনা?
একাধিক রাজনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনের আগে ডা. জোবায়দা রহমান বিএনপি’র জন্য একটি চমক হিসেবে উপস্থাপিত হতে চাচ্ছিলেন। তারেক জিয়ার পরিকল্পনা ছিল যে, নির্বাচনের আগে ডা. জোবায়দাকে ঢাকায় পাঠানো হবে এবং ডা. জোবায়দা বিএনপিকে জাগিয়ে তুলবেন, বিএনপির নেতৃত্ব দিবেন এবং তার নেতৃত্বে নির্বাচনে বিএনপি নাটকীয় কিছু করে ফেলবে। সেরকম একটি ভাবনা থেকে প্রস্তুত করা হচ্ছিল। আর সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জোবায়দা রহমান যেন বাংলাদেশ এসে কোনরকম প্রতিবন্ধকতার মুখে না পড়েন সেজন্য তার মামলাগুলো খারিজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ ভেস্তে গেল। বিএনপিতে ডা. জোবায়দা রহমানের আলাদা একটি অবস্থান রয়েছে। তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে বিএনপির মধ্যে। বিএনপির অনেকেই মনে করেন, তারেকের চেয়ে জোবায়দা অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন। বিশেষ করে শিক্ষা-দীক্ষার দিক থেকে অবশ্যই ডা. জোবায়দা অনেক এগিয়ে। বিভিন্ন সময়ে বিএনপির নেতারা তার সঙ্গে কথা বলে মুগ্ধ হয়েছেন বলেও অনেকে জানিয়েছেন। রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও জোবায়দা রহমানের একটি প্রভাব বিএনপির রাজনীতির মধ্যে আছে।
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্ব শূন্য অবস্থায় রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ, ফিরোজায় দিন কাটাচ্ছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার মতো বাস্তব পরিস্থিতি তার নেই। অন্যদিকে, তারেক জিয়া লন্ডনে। অনেকেই মনে করছেন যে, লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ বৈঠকের মধ্য দিয়ে হয়তো জোবায়দা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। ডা. জাফরুল্লাহ মনে করেছিলেন যে, আগামী নির্বাচনে ডা. জোবায়দা হতে পারেন ট্রাম্পকার্ড। আর সেজন্যই তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর একটি পরিকল্পনা তারা গ্রহণ করেছিলেন।