জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর আসল খুনি: প্রধানমন্ত্রী

পত্রিকার পাতায় পড়তে ছবিতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর আসল খুনি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী ঘটনা এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের সময়ে প্রসিডিংস ও সাক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর খুনির বিষয়ে বিএনপির হারুনুর রশিদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বিএনপির হারুন তার বক্তব্যে দাবি করেন—‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অনুমাননির্ভর বক্তব্য দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারে তার নাম আসেনি। তিনি এর ধারে-কাছেও ছিলেন না।’ ‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদকে ধন্যবাদ দিতে জাতীয় সংসদে তোলা একটি সাধারণ প্রস্তাবের ওপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। বুধবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের আনা এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ প্রস্তাব সংসদে পাস হয়।
হারুনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রস্তাবের ওপর বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও, আজকের সংসদে বিএনপির একজন সংসদ সদস্য কী বললেন, সেটা দেখলেন! বুঝলেন তাদের মানসিকতা। এরা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এদের অন্তরে এখনও সেই পেয়ারের পাকিস্তান রয়ে গেছে। পাকিস্তানের গোলামিটাই তারা পছন্দ করে। বিএনপির হারুন সাহেবের বক্তব্যে এটা প্রকাশ হলো না!’


জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর খুনি বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খুনিকে কেন খুনি বলবে না। আমার কাছে ছবি আছে। ১৯৮৭ সালে খালেদা জিয়া এবং কর্নেল ফারুক কথা বলছেন, সেই ছবি আমার কাছে আছে। মাননীয় স্পিকার আপনার কাছে সেই ছবি পাঠিয়ে দিয়েছি। কর্নেল ফারুক আর রশিদের বিবিসির ইন্টারভিউতে আছে জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে ছিল।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসঙ্গ টেনে সরকার প্রধান বলেন, ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহারের পর আমরা যখন মামলা করতে গেলাম, আমি বললাম—জিয়াউর রহমানের নামও থাকতে হবে। কারণ, সে-ই আসল খুনি। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছিল যেহেতু সে মৃত, তাকে আসামি করে কোনও লাভ হবে না। তাকে আসামি করা যাবে না। সেই সময়কার স্বরাষ্ট্র সচিব রেজাউল হায়াত এটা বলেছিলেন। সেই কারণে জিয়ার নামটি দেওয়া হয়নি। যেহেতু মৃত ব্যক্তির বিচার হয় না, তাই দিয়ে লাভ নেই। কিন্তু যখন প্রসিডিংস শুরু হয়, সাক্ষী হয়, তখন কিন্তু এটা স্পষ্ট জিয়াউর রহমান এই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তা না হলে খন্দকার মোশতাক তাকে সঙ্গে সঙ্গে সেনাপ্রধান করবে কেন? তাকে তো সেনাপ্রধান করেছে। কাজেই এগুলো রেকর্ড। কাজেই এটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশ এমন একটি পর্যায় চয়ে যায়, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পরিচয় দিতে সাহস পেতো না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। ৭৫-এর পর এমন একটি বাংলাদেশ, মনে হতো এই বাংলাদেশ কি স্বাধীন বাংলাদেশ!’