
এই আমার দেশ ডেক্স : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। তিনি হুইল চেয়ার ছাড়া চলাচল করতে পারেন না। নিজে নিজে বিছানা থেকে ওঠতে পারছেন না। তাকে সব সময় দুইজন সাহায্য করতে হয়।
‘সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে সম্প্রতি তার জিহ্বায় আলসার হয়েছে। তিনি কিছুই খেতে পারছেন না। গত এক সপ্তাহে ৪ কেজি ওজন কমে গেছে।এটি একটি সর্তকবার্তা। তিনি একেবারে শুকিয়ে ছেন, দেখলে চিনতে পারবেন না।’
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তার দুটি দাঁতের ভয়াবহ অবস্থা। আমরা এ বিষয়ে কয়েকবার হাসপাতালের চিকিৎসকদের জানিয়েছি। তারা এটার ব্যবস্থা নেবেন বলে এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি।
‘ইদানীং’ ম্যাডামের আরেকটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেটা হলো তার ব্লাড সুগার নামছেই না। তিনি পা সোজা করতে পারেন না। তার কাঁধে সমস্যা দেখা দিয়েছে। মোটকথা তিনি ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।’
তিনি বলেন, আমরা এখনও বুঝতে পারতেছি না যে, কেন তার চিকিৎসা নিয়ে এমন করা হচ্ছে? তারা কি চায়। তারা কি ম্যাডামকে মেরে ফেলতে চায়? চিকিৎসাটাতো তার প্রাপ্য। কিন্তু তাকে এই প্রাপ্য চিকিৎসাটাই দেয়া হচ্ছে না। আমরা আরও উন্নত স্পেশালাইজড হাসপাতালে তার চিকিৎসার এবং অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
গত ১ এপ্রিল থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে কেবিন ব্লকের ৬২৫ নম্বর কক্ষে রাখা হয়েছে।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ জজ আদালত ৫ বছরের সাজা দেয়ার পর থেকে পুরনো ঢাকার নির্জন কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি। এর পর থেকে তিনি নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন হুইল চেয়ারে করে তাকে চলতে হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাকে এ্রখন ঠিক মতো তার যে খাবার সেগুলো দেয়া হয় না। তার যে সব ফলমূল খাওয়া উচিত সেগুলো তিনি ঠিক মতো পান না। সবচেয়ে বড় হচ্ছে তার চিকিৎসা- এটা কোনো মতেই এখানে (বিএসএমএমইউ) সম্ভব হচ্ছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর জিহ্বার মধ্যে আলসার হয়েছে যেটাকে টাং আলসার বলে। অন্যদিকে তার দাঁত সার্প (চোখা) হয়ে গেছে। সেটা যখন তার জিহ্বায় আঘাত করে তখনই তিনি কষ্ট পান। যার ফলে তিনি এখন কিছু খেতেও পারছেন না।
‘এই বিষয়টা ধরার পড়ার পরে সেখানকার চিকিসকরা টুথ ব্রান্ডিং করেছিলেন যাতে সার্পনেসটা কমিয়ে এনেছিলেন। এখন তার দাঁতের সার্পনেস আরো বেশি করে দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, দেশনেত্রীর দাঁতের রুট ক্যানেল করা দরকার, স্কেলিং করা দরকার, টুথ এসট্রাকংশ করা দরকার। দুই-একটা দাঁত তার নষ্ট হয়ে গেছে বয়সের কারণে সেগুলো তুলে ফেলা দরকার।
খালেদা জিয়ার ব্লাড সুপার ইনসুলিন নেয়ার পরও নামছে না বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, উনি ডায়াবেটিসের তিনটা ওষুধ খাচ্ছেন তারপরও কিছুতেই তা ২০ এর নিচে নামছে না। যেটা অত্যন্ত এলার্মিং।
আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, আমরা শিগগিরই তার মুক্তি চাই, যে মুক্তিটা তার প্রাপ্য, বলেন তিনি।