এজবাস্টন টেস্টে ভারতীয়দের ‘পাকি’ সম্বোধন করে বর্ণবিদ্বেষী গালি

তারা গালির যে উদাহরণ দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভারতীয় দর্শকদের ‘পাকিস্তানি’ বলে সম্বোধন করে গালাগালি করা হয়েছে

এজবাস্টন টেস্টে বুমরাদের খেলা দেখতে গিয়েছিলেন প্রচুর ভারতীয়। সোমবার তাদের বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। একের পর এক ভারতীয় দর্শক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে অভিযোগ করেছেন, তাদের বর্ণবিদ্বেষী গালি দেওয়া হয়েছে।

তারা গালির যে উদাহরণ দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভারতীয় দর্শকদের “পাকিস্তানি” বলে সম্বোধন করে গালাগালি করা হয়েছে। তারা যে উদাহরণ দিয়েছেন, তাতে প্রতিটি গালাগালিই বর্ণবাদী।

যেমন, অনিল সেহমির টুইটে বলা হয়েছে, তাদের “পাকি…” এবং “কারি সি…টিএস” বলে গালি দেওয়া হচ্ছিল। অন্তত ১০ বার তারা স্টুয়ার্ডদের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেছেন। দেখিয়েছেন, কে বা কারা এই গালি দিচ্ছে। স্টুয়ার্ডরা তাদের বলেছেন, নিজেদের জায়গায় গিয়ে বসতে। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

আরেক দর্শক কুশাল মালডে টুইট করে অভিযোগ করেছেন, “এত খারাপ গালাগালি তাকে কখনো মাঠে এসে শুনতে হয়নি।” তিনি উদাহরণ হিসেবে যে গালির কথা বলেছেন, তা হলে “ইউ স্মেলি পা…।” তিনিও স্টুয়ার্ডের কাছে নালিশ করেছিলেন। কোনো ফল হয়নি। তাকেও এইরকমভাবে নিজের জায়গায় বসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাবেক কাউন্টি ক্রিকেটার আজিম রফিক টুইট করে বলেছেন, “এই টুইটগুলো পড়ে খুবই হতাশ লাগছে।”

তিনি ভারতীয় সমর্থকদের বেশ কিছু টুইট রি-টুইটও করেছেন। আজিম রফিক ইয়র্কশায়ারে থাকার সময় অভিযোগ করেছিলেন, তাকে সংস্থাগত বর্ণবাদের মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়। পরে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) বেশ কিছু নিয়ম চালু করে।

এছাড়া প্রচুর ভারতীয় দর্শক হয় নিজে টুইট করেছেন অথবা অন্যদের টুইটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। প্রত্যেকের অভিযোগ মোটামুটি একই।

তারা প্রশ্ন করেছেন, পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে তারা বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের মুখে পড়বেন, আর যারা ওই মন্তব্য করলো, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হলো না, এরকম কেন হবে? তবে “দ্য ভারত আর্মি”-র পক্ষে এটাও জানানো হয়েছে, কিছু ইংরেজ সমর্থক তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

ইসিবির বক্তব্য
ভারতীয় দর্শকরা এই বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের মুখে পড়ার অভিযোগ করার পর ইসিবি জানায়, “আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা এজবাস্টনের সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। ক্রিকেটে বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই।”

এজবাস্টনের তরফে বলা হয়েছে, তারা খুবই দুঃখিত। এই ধরনের ব্যবহার তারা কোনোভাবেই সমর্থন করেন না। যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তারা জানিয়েছে, এজবাস্টনে কাউকে কোনো হেনস্তার মুখে পড়তে হবে না।

ম্যাচের অবস্থা
মঙ্গলবারই এজবাস্টন টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিন। এখন যা অবস্থা, তাতে ১১৯ রান করলে ইংল্যান্ড জিতে যাবে। তাদের হাতে আছে সাত উইকেট। ভারত যদি সাত ইউকেট নিতে পারে, তাহলে টেস্ট ও সিরিজ জিতবে।

অস্ট্রেলিয়ার ঘটনা
২০২১ সালে ভারতীয় ক্রিকেটারদের কটূক্তির মুখে পড়তে হয়েছিল। সিডনিতে মোহাম্মদ সিরাজের বিরুদ্ধে এই কটূক্তি করা হয়। তখন ছয়জন দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।