নিজস্ব প্রতিবেদক: উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতাকারী মন্ত্রী, এমপি ও দলের প্রভাবশালী নেতাদের শাস্তির আওতায় আনছে না আওয়ামী লীগ।
আপাতত অপরাধ পর্যালোচনা, সম্মুখ সমালোচনা ও ভবিষ্যৎ সতর্ক বার্তা দেবে দলটি। আর দলীয় পদ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও অপরাধ মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের গণহারে বহিষ্কার না করে ‘চাপে রাখার কৌশল’ নিয়ে ভাবছে ক্ষমতাসীনরা।
আর এসব কার্যক্রম ২৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যুগান্তরকে জানিয়েছেন এসব কথা।
সচিবালয়ে সোমবার যুগান্তরের সঙ্গে আলাপচারিতায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বড় প্রতিপক্ষ বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় দল থেকে অনেকে নির্বাচন করেছেন। আমরা দুইশ’ বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম পেয়েছি। অনেক উপজেলায় দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। কিছু প্রেক্ষাপটে এমনটি হয়েছে। সেক্ষেত্রে অপরাধ মাত্রা দেখে শাস্তি কার্যক্রর হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন বন্যা চলছে। স্থানীয় নেতাকর্মীরা এখন বন্যার্তদের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। অনেক নেতাকর্মী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। মানবিক বিবেচনায় এখন বহিষ্কার কিংবা শোকজ নোটিশ পাঠানো ঠিক হবে না।
তবে এসব কেটে উঠলে দ্রুত দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে। আওয়ামী লীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের অনেক নেতা উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহীদের উৎসাহিত করেছেন।
স্থানীয় অনেক নেতা নির্বাচন করবেন কিনা জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় নেতারা চুপ থেকেছেন। এতে অনেকে উৎসাহিত হয়ে নির্বাচন করেছেন। এখন দেখার বিষয় হল- এতে দল কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হল। বিএনপি নির্বাচনে থাকলে বিদ্রোহী হওয়ার সাহস কেউ করতেন না।
এখন সর্বোচ্চ শাস্তি বাস্তবায়ন কঠিন হবে। সাংগঠনিক সম্পাদকেরা জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীদের শোকজ নোটিশ দিলে তার জবাবে কেন্দ্রীয় অনেক নেতার নিশ্চুপ থাকা বা উৎসাহিত করার বিষয়টি ওঠে আসবে।
এতে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। তবে কৌশলী কিছু একটা করতে হবে। যেহেতু দলীয় প্রধান নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে নির্বাচন নিয়ে অতি বাড়াবাড়িকারীরা সর্বোচ্চ (বহিষ্কার) শাস্তির আওতায় আসবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার ও শোকজের সিদ্ধান্ত হয়। বলা হয়, নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে যেসব মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী নেতা কাজ করেছেন, তাদেরও কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠাবে আওয়ামী লীগ।