নিজস্ব প্রতিবেদক: দু’টি হজ এজেন্সির ১৭৩ জন হজযাত্রীর সৌদি আরব যাওয়ার বিমানের টিকিট করা হয়েছিল আজ শুক্রবারের। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তারা আজই ইহরামের কাপড় পরে তাদের সৌদি আরব রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের জন্য এখনো হজ ভিসা ইস্যু হয়নি, মক্কা-মদিনার বাড়ি ভাড়াও করা হয়নি। গ্রুপ লিডাররা টাকা না দেয়ার কারণে এই যাত্রীদের হজে যাওয়ার বাকী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছেনা দাবি এজেন্সি মালিকের। গত দুই দিন দু’টি এজেন্সি মালিকের সাথে বৈঠক করেছে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। কিন্তু হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যুর কোনো ব্যবস্থা করা যায়নি বলে তাদের টিকিটও বাতিল করতে হচ্ছে। এ দিকে একটি ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ১৯৮ জন হজযাত্রীর বিমানের টিকিট দেয়ার কথা বলে টিকিট প্রতি ছয় হাজার টাকা অতিরিক্ত বাবদ মোট ৯ লাখ টাকা নিয়ে টিকিট না দেয়া এবং টাকাও ফেরত না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সুরেশ্বর ট্রাভেলস নামে একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে। ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন মেসার্স ওয়াহিদ ট্রাভেলস নামে একটি হজ এজেন্সি। তবে অভিযুক্ত এজেন্সির মালিক অভিযোগটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন এটি ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। উভয় মন্ত্রণালয়ই অভিযোগ আমলে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে শেষের দিকে গ্রুপ লিডারদের প্রত্যারণা ও টিকিটসহ অন্যান্য সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে হাবের সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম নয়া দিগন্তকে বলেন, এই দু’টি হজ এজেন্সির হজযাত্রী সংশ্লিষ্ট সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমরা বৈঠক করেছি। আমরা এই সমস্যা সমাধান করে হজযাত্রীদের পাঠানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
জানা গেছে, স্বদেশ ওভারসিজের ১০৬ জন ও বিদেশ ভ্রমণ ট্রাভেলসের ৬৭ জন হজযাত্রীর ফ্লাইটের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট আগেই করা হয়েছে। এই হজযাত্রীদের ফ্লাইট আজ শুক্রবার। কিন্তু গতকাল এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই হজযাত্রীদের সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া ও তাসরিয়ার অনুমোদন নেয়া হয়নি এবং ফলে ভিসারও আবেদন করা হয়নি। আশকোনা হজ অফিস ও হাবের নিজস্ব মনিটরিংয়ে বিষয়টি নজরে আসার পর উভয় এজেন্সি মালিককে নয়াপল্টনে হাব কার্যালয়ে দফায় দফায় ডেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে হাব। এজেন্সিগুলো গ্রুপ লিডার থেকে টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছে। হাব যেকোনো উপায়ে হজযাত্রীদের পাঠানোর জন্য এজেন্সি মালিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যায় জানতে চাইলে বিদেশ ভ্রমণ ট্রাভেলসের এক কর্মকর্তা জানান, আজ শুক্রবারের টিকিট বাতিল করতে হচ্ছে। তবে কিছু টাকার ব্যবস্থা হয়েছে। হজযাত্রীদের পাঠানোর জন্য জোর চেষ্টা চলছে। আশা করছি শুক্রবার না হলেও কয়েকদিনের মধ্যেই তারা যেতে পারবেন।
এই দু’টি এজেন্সির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ এসেছে কি না জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, আসলে এবার কিন্তু মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সব চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে। আপনারা দেখে থাকবেন প্রথমে হজ অফিস ৫৫টি এজেন্সিকে ডেকেছিল। পর্যায়ক্রমে সেটা ১২টি এজেন্সিতে এসে ঠেকে। এখন আমরা যে এজেন্সির সমস্যা দেখছি আলোচনা করে সেই সমস্যাগুলো সমাধান করে দিচ্ছি। এই ধরনের অনেকগুলো সমস্যা সমাধান করে দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
চলতি বছরের হজ ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি জানিয়ে হাবের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, ছোটখাট কিছু সমস্যা আছে সেগুলো হজ ও অফিসের সাথে সমন্বয় করে হাবের মধ্যস্থতায় সমাধান করে দেয়া হচ্ছে।